কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি বা যুদ্ধসমাধি থেকে ২৪ জাপানি সৈনিকের মধ্যে ২৩ জনের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি একজনের সমাধিতে কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে খননকাজের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। শিগগিরই এগুলো তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এর আগে গত ১৩ নভেম্বর থেকে সৈনিকদের দেহাবশেষ সন্ধানে খননকাজ শুরু হয়।
জাপানের ফরেনসিক দলকে সহায়তাকারী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীরপ্রতীক শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বলেন, ৮১ বছর পরও সৈনিকদের কিছু কঙ্কাল, মাথার খুলি ও শরীরের বিভিন্ন অংশের বেশ কিছু হাড় আমরা পেয়েছি। পুরো টিমকে এজন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। প্রতিটি সমাধি কখনো যন্ত্রপাতি, কখনো হাতে সাবধানতার সঙ্গে খনন করতে হয়েছে। বিভিন্ন দেশে ৬০-৬৫ বছরের রেকর্ড থাকলেও আমার মনে হয় এবারই প্রথম দীর্ঘ এত বছর পর আমরা সমাধি খনন করে সৈনিকদের কিছু হাড় পেয়েছি।
তবে একজনের সমাধিতে কিছু পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে যে সমাধিতে কোনো আলামত মেলেনি ওই সৈনিকের বয়স খুব কম ছিল। ২৩ জনের সমাধিতে যতটুকু দেহাবশেষের আলামত মিলেছে, আশা করি জাপানে নিয়ে ফরেনসিক টিম পরীক্ষাগারে একটি ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে। জাপানি ফরেনসিক টিমও এ বিষয়ে আশাবাদী বলে তিনি জানান।
কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রিতে ১৯৪১ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ৭৩৭ জন সেনাকে সমাহিত করা হয়। ১৩টি দেশের ৭৩৭ জন যোদ্ধার মধ্যে মুসলিম ধর্মের ১৭২ জন, বৌদ্ধ ধর্মের ২৪ জন, হিন্দু ধর্মের ২ জন এবং বাকিরা খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী।
এরমধ্যে যুক্তরাজ্যের ৩৫৭ জন, কানাডার ১২ জন, অস্ট্রেলিয়ার ১২ জন, নিউজিল্যান্ডের ৪ জন, দক্ষিণ আফ্রিকার একজন, অবিভক্ত ভারতের ১৭১ জন, রোডেশিয়ার ৩ জন, পূর্ব আফ্রিকার ৫৬ জন, পশ্চিম আফ্রিকার ৮৬ জন, মিয়ানমারের একজন, বেলজিয়ামের একজন, জাপানের ২৪ জন এবং পোল্যান্ডের একজনের সমাধি রয়েছে।
জাহিদ পাটোয়ারী/এফএ/এএসএম