সাত কলেজ শিক্ষকদের কর্মবিরতি চলছে, ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ

রাজধানীর সরকারি সাত কলেজে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে শিক্ষকদের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি। প্রস্তাবিত ‌‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’র ভর্তি নিশ্চিতকরণ ও শ্রেণি কার্যক্রম শুরুর নির্দেশনাকে ‘আইনসিদ্ধ নয়’ উল্লেখ করে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষকরা এ কর্মবিরতি করছেন। এতে কলেজগুলোতে সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা ও দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বুধবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, তিতুমীর কলেজসহ অন্যান্য ক্যাম্পাসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কলেজগুলোর কোনো বিভাগেই ক্লাস হয়নি। কোথাও শিক্ষার্থী এলেও শিক্ষক না আসায় ক্লাস হয়নি। আবার কোথাও শ্রেণিকক্ষই তালাবদ্ধ। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক কম। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের ঢাকা কলেজ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. দিলুর রহমান বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি এখনও প্রত্যাহার করা হয়নি। আমরা কোনো নির্দেশনাও পাইনি। মন্ত্রণালয়ের ক্লাসে ফেরার আহ্বান আমাদের নেতারা পর্যালোচনা করেছেন। তবে কর্মসূচি স্থগিত করার মতো কোনো নির্দেশনা কেন্দ্র থেকে আসেনি। তাই কর্মসূচি আগের মতোই চলছে। গত ১৭ নভেম্বর ঢাকা কলেজ অডিটো

সাত কলেজ শিক্ষকদের কর্মবিরতি চলছে, ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ

রাজধানীর সরকারি সাত কলেজে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে শিক্ষকদের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি। প্রস্তাবিত ‌‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’র ভর্তি নিশ্চিতকরণ ও শ্রেণি কার্যক্রম শুরুর নির্দেশনাকে ‘আইনসিদ্ধ নয়’ উল্লেখ করে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষকরা এ কর্মবিরতি করছেন। এতে কলেজগুলোতে সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা ও দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, তিতুমীর কলেজসহ অন্যান্য ক্যাম্পাসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কলেজগুলোর কোনো বিভাগেই ক্লাস হয়নি। কোথাও শিক্ষার্থী এলেও শিক্ষক না আসায় ক্লাস হয়নি। আবার কোথাও শ্রেণিকক্ষই তালাবদ্ধ। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক কম।

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের ঢাকা কলেজ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. দিলুর রহমান বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি এখনও প্রত্যাহার করা হয়নি। আমরা কোনো নির্দেশনাও পাইনি। মন্ত্রণালয়ের ক্লাসে ফেরার আহ্বান আমাদের নেতারা পর্যালোচনা করেছেন। তবে কর্মসূচি স্থগিত করার মতো কোনো নির্দেশনা কেন্দ্র থেকে আসেনি। তাই কর্মসূচি আগের মতোই চলছে।

গত ১৭ নভেম্বর ঢাকা কলেজ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত জরুরি সভা থেকে ১৮, ১৯ ও ২০ নভেম্বর তিনদিনের পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দেন শিক্ষকরা। অভিযোগ করা হয়, বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে অন্তর্বর্তী প্রশাসক ভর্তি ও শ্রেণিকার্যক্রম সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছেন। ‘অসঙ্গত ও আইনবহির্ভূত’ সিদ্ধান্তের কারণে নতুন জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষকরা। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্তর্বর্তী প্রশাসকের তিন কার্যদিবসের মধ্যে পদত্যাগ দাবি করা হয়।

শিক্ষক নেতাদের অভিযোগ, প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাদেশ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এর আগে ভর্তি নিশ্চায়ন বা শ্রেণিকার্যক্রম শুরু করার নির্দেশনা দেওয়া হলে তা আইনি জটিলতা তৈরি করবে। সরকারি কলেজে কর্মরত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের শিক্ষকদের ওই প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কোনো অ্যাকাডেমিক কাজে যুক্ত হওয়ার বিধিবদ্ধ সুযোগ নেই। তাই এ সিদ্ধান্তকে তারা ‘অপ্রযোজ্য ও বাস্তববিবর্জিত’ বলে অভিহিত করেন।

এদিকে, কর্মবিরতির কারণে সাত কলেজের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নতুন শিক্ষার্থীরা ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারছেন না। শিক্ষার্থীরা বলছেন, ক্যাম্পাসে ঘুরেও কোনো ধরনের সেবা পাচ্ছেন না। এতে ভোগান্তি বাড়ছে।

ঢাকা কলেজের নবাগত শিক্ষার্থী রিয়াদ হাসান বলেন, দুইদিন ধরে কলেজে আসছি। কাউন্টারে গিয়ে জানা যাচ্ছে, ভর্তি সংক্রান্ত সব কাজ বন্ধ। আবার অনলাইনে ভর্তির নোটিশ দেওয়া আছে। এখন কী করবো কিছুই বুঝতে পারছি না।

ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী শ্রাবণী আক্তার বলেন, আমরা প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়ে ক্লাস শুরুর অপেক্ষায়। এখন কর্মবিরতির কারণে কোনো শিক্ষকের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। বিভাগেও কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। কোথায় কাগজপত্র জমা দিতে হবে তার কিছুই বুঝতে পারছি না।

অন্যদিকে, শিক্ষকদের কর্মবিরতির মধ্যেই মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়, রাজধানীর সাত সরকারি কলেজকে একীভূত করে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ নামে নতুন একটি স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

এতে আরও বলা হয়, ব্যক্তিগত ধারণা, অসম্পূর্ণ তথ্য বা গুজবের ভিত্তিতে বিভ্রান্তি বা পারস্পরিক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি না করে সবাই দায়িত্বশীল আচরণ করবেন। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের মূল্যবান শিক্ষাজীবন এবং সামগ্রিক শিক্ষা কার্যক্রম যেন কোনোভাবেই ব্যাহত না হয়, সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকার জন্যও বিশেষভাবে আহ্বান জানানো হয়।

এএএইচ/এএমএ/এমএস

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow