অপারেশন থিয়েটারে রোগীকে রেখে স্বাস্থ্যকর্মীর টিকটক, অতঃপর...

2 hours ago 3
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় একটি প্রাইভেট ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটারে রোগীকে রেখে এক স্বাস্থ্যকর্মীর (নার্স সহকারী) করা টিকটক ভিডিও ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সকালে অভিযান চালিয়ে ওই ক্লিনিকের ‘অপারেশন থিয়েটার’ সিলগালা করেছে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এর আগে বুধবার (২৭ আগস্ট) রাতে এ ঘটনাটি ঘটে। পরে নেটিজেনরা ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করলে সেটি দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। পরে এ নিয়ে চলতে থাকে আলোচনা-সমালোচনা।  এ ব্যাপারে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবুল হাসনাত বলেন, ওই ভিডিওর মাধ্যমে রোগীর গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা হয়েছে। বিষয়টি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। ওই ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটার সিলগালা করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। টিকটক ভিডিও বানানো ওই অপারেশন থিয়েটারটি লোহাগড়া উপজেলার ফুল কাজীর মোড়ে অবস্থিত প্রত্যাশা ক্লিনিকের। যিনি টিকটকগুলো তৈরি করেছেন তিনি ওই ক্লিনিকের একজন স্বাস্থ্যকর্মী (নার্সের সহকারী) হিসেবে তিনি কাজ করেন। তার নাম প্রিয়া বেগম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল ওই ক্লিনিক কর্মীর একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, একজন রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে শোয়ানো আছে। তার শরীরের ওপর রক্তমাখা কাপড়। পাশে অস্ত্রপাচারের সরঞ্জামাদি। সেখানে দাঁড়িয়ে রোগীর শরীরে স্পর্শ করে নার্সের মতো পোশাক পরা এক নারী ভিডিও তৈরি করছেন। ভিডিওর সঙ্গে রয়েছে মিউজিক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই বলছেন, অপারেশন থিয়েটারের ভেতরে রোগীকে নিয়ে ভিডিও তৈরি করে রোগীর গোপনীয়তা মারাত্মকভাবে লঙ্ঘন করা হয়েছে। এতে সংশ্লিষ্ট ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ও কর্মীর বিচার দাবি তুলছেন অনেকে। শেখ কামরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি মন্তব্য করেন, প্রথমত তাকে এই পেশা থেকে চিরদিনের জন্য নিষিদ্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত তাকে অন্যের শরীর (ইজ্জত) মা-বোনের সম্মান নষ্ট হওয়ার জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তৃতীয়ত তাকেসহ ওই ক্লিনিকের মালিককে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। এমন কাজ করে অন্যায় করেছেন বলে স্বীকার করে ওই স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, আমি অন্যায় করেছি। আর কখনো করব না। ভিডিওগুলো ডিলিট করে দিয়েছি। প্রত্যাশা ক্লিনিকের মালিক মো. সেলিম বলেন, ও দুই থেকে তিন মাস আমার এখানে যুক্ত হয়েছে। ওর এ কাজে আমি নিজেই লজ্জিত। আমার আর তেমন কিছু বলার নেই। লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবুল হাসনাত কালবেলাকে বলেন, রোগীর গোপনীয়তা রক্ষার দায়িত্ব তাদের ছিল। ভিডিও প্রকাশ করে তিনি অপরাধ করেছেন। ওই রোগী ও তার পরিবার চাইলে মামলা করতে পারে।
Read Entire Article