অর্থের অভাবে সন্তান বিক্রির চেষ্টা, পাশে দাঁড়ালেন জেলা প্রশাসক

2 hours ago 6

নেত্রকোনা পৌর শহরে অভাবের তাড়নায় নবজাতক জমজ সন্তান বিক্রির চেষ্টা করা পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাফিকুজ্জামান ও সমাজসেবার উপপরিচালককে সঙ্গে নিয়ে পরিবারটির বাড়িতে ছুটে যান। তাৎক্ষণিকভাবে শিশু খাদ্য, শুকনো খাবার ও আর্থিক সহায়তা করেন জেলা প্রশাসক।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সরকারি খাস জায়গায় একটি ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করেন এক দম্পতি। ঘরটির বেশিরভাগ জায়গায় পলিথিন দিয়ে ঘেরা। বৃষ্টি এলে পানিতে ভরে যায়। ছোট একটি চৌকিতে ছয়জন মানুষের বসবাস। 

চার সন্তানের জনক বাবা কখনও রাজমিস্ত্রীর কাজ আবার কখনও রিকশা চালান। বড় দুই ছেলে ৬ ও ৪ বছর বয়সী কিন্তু অপুষ্টিজনিত কারণে তা বুঝার উপায় নেই। এত অভাব অনটনের মাঝে আবারও যমজ এক ছেলে ও এক মেয়ের জন্ম হয়। 

নবজাতক দুই সন্তান মায়ের বুকের দুধ পায় না। কারণ মায়েরও সঠিকভাবে খাবার খাওয়া হয় না। তাই কৌটার দুধ খাওয়াতে হয়। রিকশাচালক বাবার পক্ষে যা অসম্ভব। তাই বাধ্য হয়ে বাবা-মা দুজনই সিদ্ধান্ত নেন তারা জমজ বাচ্চা দুটি বিক্রি করে দেবেন।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শিশু সুরক্ষা সমাজকর্মী শিশু বিক্রির বিষয়টি শনাক্ত করে জেলা শিশুকল্যাণ বোর্ডের সভায় উত্থাপন করে। ঘটনা জেনে জেলা প্রশাসক তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেন। পরিবারের বড় সন্তানকে ‘শিশু পরিবার (বালক), নেত্রকোনা’তে লালন পালনের জন্য পাঠানো পরামর্শ দেন। 

এ সময় নবজাতক জমজ শিশুর জন্য শিশুখাদ্য, পরিবারের জন্য শুকনা খাবার এবং নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেন ডিসি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান।

জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ পরিবারটির সার্বিক তত্ত্বাবধান অব্যাহত থাকবে এবং দীর্ঘমেয়াদে পুনর্বাসন নিশ্চিত করা হবে।

নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান কালবেলাকে বলেন, নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন এমন মানবেতর জীবনযাপন করা মানুষ রয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারটির পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। সচ্ছলদের অসহায় সুবিধাবঞ্চিতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

Read Entire Article