আইএফআইসি, ন্যাশনাল ও এবি ব্যাংকে বিশেষ নিরীক্ষা শুরু

2 weeks ago 10

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে লুটপাট ও অনিয়মের কারণে সংকটে পড়া আরও তিনটি ব্যাংকের সম্পদ পরিস্থিতি যাচাইয়ে (অ্যাসেট কোয়ালিটি রিভিউ–একিউআর) বিশেষ নিরীক্ষা শুরু করেছে বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান ডেলয়েট।

নিরীক্ষার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ঠিক হবে এসব ব্যাংক একীভূত, অধিগ্রহণ বা অবসায়নের পথে যাবে নাকি নতুন মূলধন জোগান ও ঋণ আদায় বাড়িয়ে পুনরুদ্ধারের সুযোগ পাবে। অর্থাৎ, নিরীক্ষার ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে এই তিন ব্যাংকের ভবিষ্যৎ।

নিরীক্ষাধীন ব্যাংকগুলো হলো- আইএফআইসি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক ও এবি ব্যাংক।

বুধবার (২০ আগস্ট) ডেলয়েটের কর্মকর্তারা আইএফআইসি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন করেছেন। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

গত জুলাইয়ে দ্বিতীয় ধাপে আরও ১১টি ব্যাংকে একিউআর চালুর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত এ তালিকায় রয়েছে- এবি ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স, আল আরাফাহ্, আইএফআইসি, ইসলামী ব্যাংক, মেঘনা, ন্যাশনাল, এনআরবি, এনআরবিসি, প্রিমিয়ার ও ইউসিবি ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রতিটি ব্যাংকের প্রকৃত খেলাপি ঋণ, প্রভিশন ঘাটতি, মূলধন ঘাটতি, আমানত ও ঋণের বিস্তারিত চিত্র স্পষ্ট হবে। একই সঙ্গে ব্যাংক একীভূত করতে কত পরিমাণ মূলধন প্রয়োজন হবে, তাও নির্ধারণ করা যাবে।

এর আগে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে দুটি বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান- আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়াং এবং কেপিএমজি- ছয়টি ব্যাংকের সম্পদের মান যাচাই করে। আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়াং কাজ করেছে এক্সিম, সোশ্যাল ইসলামী ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের ওপর; আর কেপিএমজি মূল্যায়ন করেছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংকের।

সেই প্রতিবেদনে দেখা যায়, এসব ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক এবং তাদের প্রকৃত খেলাপি ঋণ পূর্বের হিসাবের চেয়ে চার গুণ বেশি।

আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের মালিকানা বিদেশি উদ্যোক্তাদের হাতে থাকায় আপাতত সেটিকে একীভূতকরণের বাইরে রাখা হয়েছে। তবে বাকি পাঁচটি ব্যাংককে একত্র করে একটি নতুন ব্যাংক প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক একীভূত করার জন্য একটি খসড়া রূপরেখা প্রস্তুত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রাথমিক হিসাবে এই প্রক্রিয়ায় ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা মূলধন বিনিয়োগের জন্য সরকারের কাছে চাওয়া হবে। পাশাপাশি আমানত বীমা তহবিল থেকে ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সংস্থা- আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকেও তহবিল সংগ্রহের চেষ্টা চলবে। প্রস্তাবিত রূপরেখায় সরকারের সম্মতি চেয়ে শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠাবে।

ইএআর/এনএইচআর/এএসএম

Read Entire Article