আগামী নির্বাচন অনেক কঠিন হতে যাচ্ছে : তারেক রহমান

3 weeks ago 10

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘সামনের যে নির্বাচন হবে এত সহজ না। এ নির্বাচন বাংলাদেশের যে কোনো নির্বাচনের চেয়ে অনেক কঠিন হতে যাচ্ছে। মানুষের ধ্যান-ধারণার পরিবর্তন হয়েছে। কেউ যদি কোনো ভুল করে থাকে তাহলে একজন নেতা হিসেবে তাকে সঠিক পথে নিয়ে আসা আপনার দায়িত্ব।’

সোমবার (০২ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী খুলনা প্রেস ক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত ‘রাষ্ট্র মেরামতে বিএনপি প্রদত্ত ৩১ দফা’ বিষয়ক খুলনা বিভাগীয় কর্মশালায় ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিএনপির জাতীয় এবং খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
 
তারেক রহমান নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘বিএনপির সব ক্ষমতার উৎস জনগণ। আমরা ক্ষমতায় যাইনি, যাব কিনা জানি না। তখনই যেতে পারব, যখন জনগণের সমর্থন পাব। নেতাকর্মীদের সব কর্মকাণ্ড হচ্ছে বিএনপির আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আগামীতে এমন হতে হবে যাতে জনগণ আপনার ও বিএনপির সঙ্গে থাকে। দলকে রক্ষা করা, সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব সবার। আপনাকে আপনার দায়িত্ব পালন করতে হবে। জনগণের সঙ্গে থাকুন, তাদের সঙ্গে রাখুন। বাংলাদেশের মানুষের আস্থা বিএনপির উপর আছে। এটি ধরে রাখার দায়িত্ব আপনার এবং আমাদের সবার।’

তারেক রহমান বলেন, ‘দেশ সব মানুষের জন্য সমাজের কিছু ব্যক্তি সংস্কারের কথা বলছেন। ৫ মাস আগেও তারা বলেনি। কিন্তু বিএনপি ২ বছর আগে থেকে বলছে। বিএনপি দেশ ও দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে। ৩১ দফা তারই প্রমাণ। গত ৩-৪ মাস সংস্কারের যে কথা হচ্ছে তার সবকিছুই ৩১ দফার মধ্যে রয়েছে। এসব দফা শুধু বিএনপির তাই নয়, বাংলাদেশের পক্ষে গণতান্ত্রিক সব দলের।’

তারেক রহমান আরও বলেন, ‘৩১ দফা সফল করতে যে কোনো মূল্যে জনগণের সমর্থন রাখতে হবে। দলের পক্ষে পরিকল্পনা নিতে হবে। কীভাবে জনগনকে পাশে রাখবেন। সব কিছুর লক্ষ্য হচ্ছে মানুষের সমর্থন আমাদের পক্ষে রাখা। একইসঙ্গে আমাদের পরিকল্পনা যাতে আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি। ৩১ দফার সব কিছু ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। যে কোনো মূল্যে আপামর জনসাধারণের আস্থা ধরে রাখতে হবে।’
 
তিনি বলেন, ‘বিগত ১৭ বছর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আপনারা সংগ্রাম করে যেভাবে টিকে ছিলেন, তার থেকে সহজ হবে এ কাজটা জনগণের ঘরে পৌঁছে দেওয়া। এত কঠিন পথ যদি আপনারা পাড়ি দিয়ে আসতে সক্ষম হয়ে থাকেন। তাহলে একটু কষ্ট করলেও ৩১ দফা আমরা জনগণের মাঝে নিয়ে যেতে পারি।’

এর আগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নেতাকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘জনগণের সমর্থন নিয়ে দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে ফ্যামিলি কার্ড এবং কৃষকদের জন্য ফার্মার্স কার্ড তৈরি করব। ফ্যামিলি কার্ডটি হবে পরিবারের মা বা স্ত্রীর নামে। এতে তার পারিবারিক ও সামাজিক মর্যাদা বাড়বে। একই সঙ্গে কৃষকদের জন্য ফার্মার্স কার্ড করা হবে, যা প্রতি মৌসুমে কৃষকের সার-বীজ বা আর্থিক সহযোগিতা প্রাপ্তিতে সহযোগিতা করবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘নারীর যোগ্যতা ও মর্যাদা আরও বৃদ্ধি করা উচিত। এটি সামাজিক আন্দোলনে রূপ দেওয়া দরকার। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে নারীদের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা ফ্রি করে দিয়েছিলেন। প্রতিটি পরিবারের জন্য একটি ফ্যামিলি কার্ড তৈরি করব। প্রান্তিক মানুষকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে মিনিমাম সহযোগিতা করার চেষ্টা করব। এটি সব শ্রেণি-পেশার মানুষ পাবে। ফ্যামিলি কার্ডটি পরিবারের মা বা স্ত্রীর নামে দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে তার মর্যাদা বাড়বে। আর যে অর্থ সাশ্রয় হবে সেই অর্থ সন্তানের স্বাস্থ্য ও লেখাপড়ায় ব্যয় করবে। এতে ভবিষ্যৎ সুন্দর একটি প্রজন্ম তৈরি হবে। সঞ্চিত অর্থ ৫ থেকে ১০ বছর পর তার অর্থনৈতিক শক্তি সৃষ্টি হবে। এতে পরিবারে তার আত্মমর্যাদা বাড়বে।’

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতদের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ড. মওদুদ আলমগীর পাভেল, বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, কেন্দ্রীয় বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক অ্যাডভোকেট নেওয়াজ হালিমা আরলী, খুলনা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু প্রমুখ।

Read Entire Article