আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও পারস্পরিক সহযোগিতা ছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি বলেছেন, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে কোনো দেশ একা টিকে থাকতে পারে না। বাংলাদেশকে সব দেশের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ ও পারস্পরিক স্বার্থনির্ভর সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর রমনায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘রিজিওনাল জিওপলিটিক্যাল ল্যান্ডস্ক্যাপ: ইমপ্যাক্ট অন দ্য সিকিউরিটি ডাইনামিকস অব বাংলাদেশ অ্যান্ড ওয়েস ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক এ সেমিনার যৌথভাবে আয়োজন করে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ (এএফডি) ও বিআইআইএসএস।
এতে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, সামাজিক উন্নয়ন, আঞ্চলিক পরিস্থিতি ও রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সেমিনারের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন বিআইআইএসএসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিস। বিশেষ অতিথি হিসেবে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান তার বিশ্লেষণধর্মী বক্তব্যে বর্তমান আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের জটিলতা এবং তার বহুমাত্রিক প্রভাবের ওপর আলোকপাত করেন।
কামরুল হাসান বলেন, বর্তমান বিশ্বের ভূরাজনীতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে জাতীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট পারস্পারিক সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীল এবং একে অন্যের সঙ্গে জটিলভাবে জড়িত।
তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমান বিশ্বে ভূগোলের চেয়ে রাজনীতি অধিক প্রভাবশালী হয়ে উঠছে, বিশেষত দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে। তিনি জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলে স্পষ্টতা, নীতিনির্ধারণে দূরদৃষ্টি এবং প্রতিরক্ষা ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ. এস. এম. আলী আশরাফ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. নিলয় রঞ্জন বিশ্বাস এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. সাহাব এনাম খান প্যানেল আলোচক হিসেবে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সেমিনারে সাবেক রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের সভাপতি এম হুমায়ুন কবির মডারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি উন্মুক্ত আলোচনা ও সারাংশ সেশন পরিচালনা করেন। ক্যাপ্টেন শফিউল মুজনিবীন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন।
আইএসপিআর আরও জানায়, সেমিনারে বক্তারা বাংলাদেশের নিরাপত্তা, পররাষ্ট্রনীতি ও আঞ্চলিক ভূরাজনীতির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন। তারা সাম্প্রতিক বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অবস্থান, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করেন।
বক্তারা বলেন, দক্ষিণ এশিয়া ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের পরিবর্তনশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতি বাংলাদেশের কৌশলগত অগ্রাধিকার নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আঞ্চলিক সহযোগিতা, কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা, প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং অপ্রচলিত নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় সমন্বিত কৌশল গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা।
সেমিনারে কূটনীতিক, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও সামরিক এ্যাটাশে, সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নেন।
টিটি/এমকেআর/জিকেএস