আশঙ্কাজনক হারে ছড়িয়ে পড়ছে পশুবাহিত এক অজানা রোগ

6 hours ago 4
রংপুরের পীরগাছায় আশঙ্কাজনক হারে গবাদি পশু থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে এক অজানা রোগ। আক্রান্তদের প্রথমে হাতে ফুসকুড়ি হয়, পরে তা ঘায়ে পরিণত হয়ে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করে।  গত এক মাসে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৩ শতাধিক মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয় চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হয়েছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে শুরুতে স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো উপজেলায়। স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা বলছেন, রোগটির উপসর্গ অ্যানথ্রাক্সের সঙ্গে অনেকটা মিলে যায়। জানা গেছে, পীরগাছা সদর, তাম্বুলপুর, ছাওলা, পারুল ও ইটাকুমারী ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এই রোগ। সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা পীরগাছা সদর, ছাওলা ও তাম্বুলপুর ইউনিয়নে। অনন্তরাম বড় বাড়ির সাবিনা আক্তার জানান, অসুস্থ গরুর সেবা করতে গিয়ে তিনি এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। দুলাল মিয়া বলেন, অসুস্থ ছাগল জবাই করার পর তার হাতে ফুসকুড়ি হয় যা পরে বড় ক্ষতে রূপ নেয়। আবুল কাশেম নামের আরেক রোগী জানান, তিনি দেড় মাস ধরে চিকিৎসা নিয়েছেন। স্থানীয় চিকিৎসকরা তাকে বলেছেন— এটি সম্ভবত অ্যানথ্রাক্স। তাম্বুলপুরের জয়নাল মিয়া বলেন, আমার চাচা অসুস্থ গরু জবাই করেছিলেন। সেই মাংস স্পর্শ করার পর পরিবারের কয়েকজনের হাতে ঘা হয়েছে। আক্রান্তরা জানান, এই রোগের উপসর্গ সবার প্রায় একই রকম। প্রথমে চুলকানি, পরে ফুসকুড়ি, ঘা ও কালো ক্ষত, যার ভেতরে প্রচণ্ড জ্বালাপোড়া করে এবং মাংস পচে গর্তের সৃষ্টি হয়। পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আঁখি সরকার কালবেলাকে জানান, প্রতিদিনই প্রায় ৫-৭ জন রোগী এমন উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসছেন। কখনো একই পরিবারের একাধিক সদস্যও আক্রান্ত হচ্ছেন। তার মতে, উপসর্গগুলো অ্যানথ্রাক্সের সঙ্গে মিলে যায়। এ দিকে বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। রংপুর স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম আক্রান্ত রোগীদের সঙ্গে কথা বলে রোগ শনাক্তে কাজ করছে। পাশাপাশি প্রাণিসম্পদ দপ্তর মাঠ পর্যায়ে গবাদি পশুকে ভ্যাকসিন দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
Read Entire Article