বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আসুন সবাই মিলে শক্তিশালী একটি জাতীয় সংসদ বিনির্মাণ করি, যেখানে সব সংস্কার প্রস্তাবগুলো আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত হবে। সেই সংবিধানকে আপনারা নতুন সংবিধান হিসেবে অভিহিত করুন আমাদের কোনো আপত্তি নেই।
বুধবার (১২ মার্চ) রাজধানীর বারিধারা জামিয়া মাদানিয়া মাদরাসায় হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে রাজনৈতিক দল ও নাগরিকদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, যে সমস্ত বন্ধুরা বলছেন, যারা গণপরিষদের মাধ্যমে সংবিধান চান, আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনারা সংস্কার কমিশনের ব্যাপক সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আপনাদের একজন প্রতিনিধি সেই সংস্কার কমিশনে সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সুতরাং আমরা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো আমরাও ব্যাপক সংস্কার প্রস্তাব কমিশনগুলোতে দিয়েছি।
তিনি বলেন, এই বাংলাদেশকে আপনারা যদি মনে করেন আপনাদের মতো একটি রিপাবলিক হিসেবে নামকরণ করবেন সেটা আপনাদের রাজনীতি; দলীয় আকাঙ্ক্ষা থেকে আপনারা নামকরণ করতে পারেন। কিন্তু যেই নামে ডাকুন না কেন, সেই বাংলাদেশে আমাদের সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করতে হবে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এই দেশ ফ্যাসিস্ট মুক্ত হয়েছে ঠিক কিন্তু ফ্যাসিবাদী কালচার, ফ্যাসিবাদী প্রচার ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের বাংলাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা বন্ধ হয়নি। আমরা যদি সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকি এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী যে জাতীয় ঐক্য গঠিত হয়েছে এটা আমরা সবাই ঊর্ধ্বে তুলে ধরে আমাদের জীবনে এই ঐক্যকে যদি শক্তিতে রূপান্তরিত করে এই জাতিকে এগিয়ে নিতে চাই তাহলে ইনশা আল্লাহ আমরা কামিয়াব হবো।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা এ দেশের শতকরা ৯০-৯২ ভাগ মুসলমান। এই দেশের মুসলমানই সবচেয়ে নির্যাতিত ছিল ফ্যাসিস্ট হাসিনার সময়ে। এ দেশের আলেম সমাজই সবচেয়ে নির্যাতিত ছিল। সুতরাং আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী বাংলাদেশের সবাই হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান-মুসলমান সবার মধ্যে একটা একতা। সবাই যেন আমরা সিটিজেন হিসেবে এ দেশে বসবাস করতে পারি।
তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কোনো বিঘ্ন যেন না ঘটে, কোনো শক্তি যেন আমাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক বীজ বপন না করে দিতে পারে। এ দেশে যারা অমুসলিম, যারা সংখ্যালঘু হিসেবে পরিচিত তাদের যেন আমরা সংখ্যালঘু না বলি। আমরা সাংবিধানিকভাবে সব নাগরিককে যেন নাগরিকই বলি। সবাই যেন এ দেশে সিটিজেন হিসেবে বসবাস করতে পারি। সেই রকম একটি আবহাওয়া-পরিবেশ আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।
অন্যদের মধ্যে বিএনপির বরকত উল্লাহ বুলু, এনডিএমের ববি হাজ্জাজ, হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরের মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে ইফতারে অংশ নেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতারা।
কেএইচ/এমআইএইচএস/এএসএম