যানবাহন চালকদের বেপরোয়া গতিতে প্রতিদিনই দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়। মানুষের জীবনের ঝুঁকি এড়াতে কিংবা দুর্ঘটনা কমাতে অধিকাংশ সড়কে স্পিডব্রেকার (গতিরোধক) নির্মাণ করা হয়। যা জনস্বার্থের কাজ। তবে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে উপকারের পরিবর্তে এটি বিপত্তিরও কারণ হয়ে উঠে। তেমনই ঘটেছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায়। প্রায় আড়াই কিলোমিটারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ১৮টি গতিরোধক দেওয়া হয়েছে। যার ফলে প্রায়শই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
পৌরসভার উদ্ববগঞ্জ থেকে আনন্দবাজার পর্যন্ত সড়কের দূরত্ব প্রায় আড়াই কিলোমিটার। শতবছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী আনন্দবাজারে পৌঁছাতে এটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। তবে, স্বল্প দূরত্বের সড়কে প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত স্পিডব্রেকার থাকায় মানুষের জন্য ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পুরো সড়কজুড়ে ১৮টি গতিরোধক নির্মাণ করা হয়েছে। যার একটিতেও এখন সতর্কতা মার্কিং চিহ্ন দেখা যায়নি। বেশিরভাগ গতিরোধক ১০০ গজ দূরত্বে নির্মাণ করা হয়েছে। আবার কয়েকটি তো ৭৫-৮০ গজেরও কম দূরত্বে হবে। ফলে এ গতিরোধকের কারণে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
সাগর নামক এক অটোরিকশা চালক বলেছেন, রাস্তায় এতোগুলো স্পিডব্রেকার থাকায় চলাচলে সমস্যা হয়। জায়গায় জায়গায় আইল্যান্ড দেওয়ায় গাড়ির পার্স ভেঙে যায়, মটর জ্বলে যায়। এগুলো কমানো উচিত।
বিল্লাল নামক এক সিএনজি চালক বলেন, চৌরাস্তা থেকে আনন্দবাজার পর্যন্ত অল্প রাস্তা সত্বেও এখানে অতিরিক্ত স্পিডব্রেকার দেওয়া হয়েছে। যার কারণে জরুরি কোনো রোগী নিয়ে যাতায়াত করা যায় না। ঘন ঘন স্পিডব্রেকার থাকায় থাকা কিছুক্ষণ পরপর ব্রেক করা লাগে। যার কারণে চরম অসুবিধা হয়। এ রাস্তায় স্পিডব্রেকার কামানোর দাবি জানাই।
তরুণ অটোরিকশা চালক সবুজ বলে, যাতায়াতের সময় গাড়ি ঝাঁকি খাওয়ায় যাত্রীদের অনেক সমস্যা হয়। এগুলো কমালে আমাদের জন্য ভালো হয়।
সড়কটি দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে যাতায়াত করেন স্থানীয় বাসিন্দা হুমায়ুন কবির। তিনি বলে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পেছন থেকে আনন্দবাজার বহুত স্পিডব্রেকার দেওয়া। মোটরসাইকেল নিয়ে গেলে মাঝে মধ্যে স্যালেঞ্জার পাইপ আটকে যায়। রোগীদের জন্য স্পিডব্রেকারগুলো বিষফোঁড়া।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা রহমান জাগো নিউজকে বলেন, উদ্ববগঞ্জ-আনন্দবাজার সড়কে এতোগুলা স্পিডব্রেকার রয়েছে তা জানা নেই। এ বিষয়ে নির্বাহী পরিচালকের সঙ্গে আলাপ করবো।
নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রহিম জাগো নিউজকে জানান, যেকোনো সড়কে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় স্পিডব্রেকার নির্মাণ করা হয়। মানুষকে দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করতে এটি করা হয়। উপজেলাটিতে বিভিন্ন বিনোদন স্পষ্ট আর শিল্প কারখানা থাকায় জনস্বার্থে স্পিডব্রেকার দেওয়া হয়েছে। গাড়ি চালকদের বেপরোয়া গতি কমানোর উপায় এটিই। বেশিরভাগ স্পিডব্রেকার ১০০ গজের দূরত্বে থাকার প্রশ্নে তিনি বলে, হ্যা ওইসব সড়কে ১০০ গজ দূরত্বই দেওয়া হয়। তবে, স্পিডব্রেকারগুলোতে মার্কিং চিহ্ন না থাকলে আমরা এটি করে দিবো।
মো. আকাশ/এএইচ/জিকেএস