ইংল্যান্ডের অধিনায়কত্ব ছাড়লেন বাটলার

3 hours ago 7
একটা অধ্যায়ের ইতি। জস বাটলার আর ইংল্যান্ডের সাদা বলের ক্রিকেটের সর্বেসর্বা থাকছেন না। ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্যর্থতার পর করাচিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচের আগেই নিজের সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন তিনি। তার কণ্ঠে হতাশা স্পষ্ট, কিন্তু এর সঙ্গে যেন একরকম স্বস্তিও মিশে ছিল। ‘এটাই আমার জন্য সঠিক সময়, দলের জন্যও সঠিক সময়। এখন নতুন কেউ এসে ব্রেন্ডন ম্যাককালামের সঙ্গে কাজ করে দলকে সামনে এগিয়ে নিতে পারবে,’ সংবাদ সম্মেলনে বললেন বাটলার। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই সিদ্ধান্ত কি শুধুই দলের স্বার্থে, নাকি অধিনায়কত্বের বোঝা থেকে মুক্তি পাওয়ার ব্যক্তিগত ইচ্ছা? বাটলারের বিদায়টা আচমকা নয়, বরং সময়ের ব্যাপার ছিল। ইংল্যান্ডের সাদা বলের ক্রিকেট যখন খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে, তখন দলের অধিনায়কত্বের ভবিষ্যৎ নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। ২০২৩ বিশ্বকাপে দলকে সুপার এইট পর্যন্তও নিতে পারেননি তিনি। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে অসহায় আত্মসমর্পণ। আর এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তানের কাছে পরাজিত হয়ে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়—প্রথমবারের মতো আইসিসি টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ডের এমন ব্যর্থতা। বাটলার নিজেও বুঝতে পারছিলেন, অধিনায়ক হিসেবে তার সময় শেষ হয়ে এসেছে। ‘এই টুর্নামেন্ট আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু দুই ম্যাচ হেরে ছিটকে যাওয়ার পর মনে হলো, অধিনায়কত্বের পথ এখানেই শেষ,’ বললেন তিনি। যখন এউইন মরগান হুট করে অবসর নিলেন, তখনই বাটলারকে নতুন দায়িত্ব দেয়া হয়। শুরুটা দারুণ ছিল—২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন তিনি। কিন্তু তারপর সবকিছু যেন বদলে যেতে থাকে। ২০২৩ সালের পর থেকে ইংল্যান্ড ১০টি সাদা বলের সিরিজ খেলেছে, যার মধ্যে মাত্র দুটি জিতেছে। ২০২৫ সালে নতুন কোচ হিসেবে ম্যাককালাম আসার পরও কোনো পরিবর্তন আসেনি। বরং বাটলার-ম্যাককালাম যুগলবন্দিতে আরও নড়বড়ে হয়ে পড়ে দল। বছরের শুরু থেকে ইংল্যান্ড ১০টি সাদা বলের ম্যাচ খেলে মাত্র একটিতে জয় পেয়েছে! তার অধিনায়কত্বে ৪৪ ওয়ানডেতে মাত্র ১৮টি জয় এবং ৫১ টি-টোয়েন্টিতে ২৬টি জয়—সংখ্যাগুলোই বলে দেয়, কেন বিদায় অনিবার্য হয়ে উঠেছিল। বাটলারকে ছাড়িয়ে ইংল্যান্ড কি নতুনভাবে পথ চলতে পারবে? সম্ভাব্য অধিনায়কের তালিকায় রয়েছেন স্যাম কারান, হ্যারি ব্রুক, কিংবা ডেভিড মালান। তবে ম্যাককালাম চাইছেন, বাটলার দলে থাকুক, যদিও অধিনায়কত্বের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। ‘সে বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। তার নেতৃত্বে ইংল্যান্ড অনেক বড় সাফল্য পেয়েছে। আমি নিশ্চিত, সে এখন খেলোয়াড় হিসেবে আরও ভালোভাবে দলে অবদান রাখতে পারবে,’ বললেন ম্যাককালাম। বাটলারের নেতৃত্বে ইংল্যান্ড সীমিত ওভারের ক্রিকেটে যে ধস নেমেছিল, সেটি কাটিয়ে উঠতে পারবে কি? নাকি নতুন অধিনায়কও সেই ব্যর্থতার ধারাবাহিকতাই বজায় রাখবেন? নতুন নেতৃত্বই ইংল্যান্ডের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ ঠিক করবে। কিন্তু জস বাটলারের নাম রয়ে যাবে—একজন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক হিসেবে, আবার এক অধিনায়ক হিসেবে যিনি দলের পতনের সময় নেতৃত্ব দিয়েছেন।
Read Entire Article