বর্তমান সময়ে আমরা সবচেয়ে বেশি অবহেলা করি সম্ভবত আমাদের খাবারের দিকটাকেই। দেরিতে রাতের খাবার, অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম, এটা-সেটা নাশতা খেতে থাকা এবং কোল্ড ড্রিংকস খাওয়ার মাধ্যমে আমরা অজান্তেই নিজেদের স্বাস্থ্যগত সমস্যার জন্য প্রস্তুত করছি। এর মধ্যে একটি হলো উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড। এটি গোপনে ধীরে ধীরে তৈরি হয় এবং একটা সময় অস্বস্তি শুরু হয়।
আরও পড়ুন : নীরবে শরীরে যে ৭ ক্ষতি করছে ইউরিক অ্যাসিড
আরও পড়ুন : প্রচণ্ড মাথাব্যথা দূর করতে যা করবেন
ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে, যদি আপনি জানা থাকে যে কী খাবেন এবং কী এড়িয়ে যাবেন।
ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে কী হয়?
উচ্চ ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কেবল জয়েন্ট ব্যথাই বাড়ায় না, এটি কিডনিতে পাথর, জয়েন্টে ধারালো ইউরেট স্ফটিক, ফোলাভাব, ব্যথা অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে। ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা আমরা অনেকেই বিবেচনায় আনি না। ফলস্বরূপ ভুগতে হয় এ ধরনের সমস্যায়।
উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড থাকলে কী খাবেন
১. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার
ভিটামিন সি শরীর থেকে ইউরিক অ্যাসিড বের করে দিতে সাহায্য করে। কমলা, আমলকী, আপেল, লেবু— যে কোনো টক স্বাদের ফল খেতে পারেন। সকালে আমলকীর রস অথবা দুপুরে সাইট্রাস জাতীয় ফল সত্যিই কাজ করে।
২. কাঁচা পেঁপে
সামান্য সেদ্ধ কাঁচা পেঁপে কেবল হজম করা সহজ নয়—এটি পেপেইন দিয়ে পরিপূর্ণ। পেপেইন হলো একটি এনজাইম, যা প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এটি প্রদাহের সময় বিশেষভাবে উপকারী, কারণ এটি জয়েন্টগুলোকে কোমল করে।
৩. দারুচিনি
ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি পেলে বিপাকও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হালকা গরম পানিতে এক চিমটি দারুচিনি মিশিয়ে খান অথবা ওটসের ওপর ছিটিয়েও খেতে পারেন। এই ছোট অভ্যাসের রয়েছে বেশ কিছু উপকারিতা। বিশেষ করে যাদের ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার, তাদের জন্য দারুচিনি উপকারী।
৪. ব্ল্যাক কফি ও গ্রিন টি
এই পানীয়গুলোতে ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড এবং ক্যাটেচিনের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ইউরিক অ্যাসিড উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি এনজাইম নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করতে পারে। শুধু খেয়াল রাখবেন, অতিরিক্ত যেন না খাওয়া হয়। দিনে এক থেকে দুই কাপ যথেষ্ট।
উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড থাকলে যা খাবেন না
১. অ্যালকোহল ও চিনিযুক্ত পানীয়
বিয়ার, হুইস্কি, চিনিযুক্ত ফিজি পানীয় সবই পিউরিন এবং চিনিযুক্ত। উভয়ই ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রার জন্য খারাপ। এগুলোর বদলে ভেষজ চা বা তাজা ফলের রস খেতে পারেন। এতে কিডনিও ভালো থাকবে।
২. প্যাকেটজাত খাবার
বেশিরভাগ প্রক্রিয়াজাত খাবারে উচ্চ-ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপ থাকে, যা ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধিতে কাজ করে। চিপস, এনার্জি ড্রিংকস, চিনিযুক্ত সিরিয়াল, এমনকি তথাকথিত স্বাস্থ্যকর গ্রানোলা বার কোনোটাই এক্ষেত্রে উপকারী নয়।
৩. লাল মাংস এবং শেল ফিশ
এগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই পিউরিন বেশি থাকে। নিয়মিত এ ধরনের খাবার খেলে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রাও একইভাবে বৃদ্ধি পাবে। নিরাপদ খাবার খুঁজলে মুরগির মতো চর্বিহীন মাংস অথবা টফু বা ডালের মতো উদ্ভিদ-ভিত্তিক প্রোটিন বেছে নিন।
আরও পড়ুন : জিহ্বার রং দেখে বুঝে নিন শরীরের ৫ সমস্যা
আরও পড়ুন : ব্রেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণগুলো জেনে নিন
সতর্কতা : এই তথ্যগুলো শুধু সাধারণ জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য। আপনার শরীর ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই একজন ডাক্তার বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।