টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে তাহাজ্জুদ নামাজরত এবং ঘুমন্ত অবস্থায় দাওয়াত ও তাবলিগের সাথি ভাইদের ওপর সাদপন্থীদের হামলার ঘটনায় যারপরনাই বিস্মিত ও হতবাক হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) জামিয়াতুল মানহাল উত্তরার ইসলামি মহাসম্মেলনে আমিরে হেফাজত মাওলানা শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন। আমিরের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাওলানা আফসার মাহমুদ।
হেফাজত আমির বলেন, ‘অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। সাদপন্থীদের এ সন্ত্রাসী হামলায় ৪ জন নিরীহ ও নিরস্ত্র সাথি ভাই শহাদাত বরণ করেছেন। এ ছাড়া শত শত সাথি ভাই আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মাঝে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা এই বর্বরোচিত হামলার হুকুমদাতা ও এর সঙ্গে জড়িত সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। সাদপন্থীরা এ নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটানোর মাধ্যমে দেশে দাওয়াত ও তাবলিগের কাজ করার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে। তাই দাওয়াত ও তাবলিগের নামে তাদের সব কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনত নবীওয়ালা কাজ। এ কাজে যারা যুক্ত থাকবেন, তাদের নববী গুণাবলি ধারণ করতে হবে। পক্ষান্তরে সাদপন্থীদের ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর ও গতরাতের (১৭ ডিসেম্বর) কার্যকলাপ প্রমাণ করে, তারা একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ। এ ধরনের সহিংস কার্যকলাপ ইসলাম কখনো অনুমোদন দেয় না। যারা এই সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িত, তারা কখনোই তাবলিগের লোক হতে পারে না। আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, গত রাতের সহিংসতা বা নাশকতার সঙ্গে জড়িত সব ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। একজনকেও ছাড় দেওয়া যাবে না।’
মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, ‘দাওয়াত ও তাবলিগের কাজের বর্তমান রূপ প্রতিষ্ঠা করেছেন মাওলানা ইলিয়াস (রহ.); যিনি উম্মুল মাদারিস দারুল উলুম দেওবন্দের সন্তান এবং এ কাজ তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই উলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়ে আসছে।’
তিনি বলেন, ‘দ্রুত সময়ে বাংলাদেশেও সার্বিকভাবে দাওয়াত ও তাবলিগের কাজ আলেম উলামাদের তত্ত্বাবধানে সাধারণ মানুষকে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের ধর্মীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনার সুযোগ দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে বিশেষভাবে আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি বাংলাদেশের আপামর তাওহিদি জনতাকে এ নবীওয়ালা কাজের সঙ্গে সঠিকভাবে এবং উলামায়ে কেরামের অধীনে থেকে নিজেকে জুড়ে রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’
সবশেষে তিনি বলেন, ‘ইসলামের আদর্শ হলো মানুষের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা এবং কোনো ধরনের সহিংসতা ইসলাম সমর্থন করে না। তাই এই পরিস্থিতিতে আমরা ধর্মীয় সহনশীলতা, শান্তি এবং সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি।’