ইসরায়েলের জন্য ‘রেড লাইন’ ঘোষণা করলো সৌদি-ফ্রান্স

2 hours ago 4

জাতিসংঘে আয়োজিত এক উচ্চপর্যায়ের সম্মেলন শেষে ইসরায়েলের জন্য ‘রেড লাইন’ বা ‘বিপৎসীমা’ ঘোষণা করেছে সৌদি আরব ও ফ্রান্স। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর সেখানে বসতি স্থাপন বা দখলদারির চেষ্টা আন্তর্জাতিকভাবে রেড লাইন বলে বিবেচিত হবে।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) ফিলিস্তিনকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের আল আকসা অঞ্চলে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়ন করতে জাতিসংঘ, ফ্রান্স ও সৌদি আরবের উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে ফ্রান্স, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, সান মারিনো ও অ্যান্ডোরা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতির ঘোষণা দেয়। এর একদিন আগে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও পর্তুগাল একই ঘোষণা দিয়েছিল।

সম্মেলন শেষে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে দেশ দুটি আরও বলেছে, ইসরায়েল এই রেড লাইন অতিক্রম করলে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে এবং বিদ্যমান ও ভবিষ্যতের শান্তি চুক্তিগুলো সরাসরি হুমকির মুখে পড়বে। গাজায় চলমান যুদ্ধের অবসান ও সব জিম্মিকে মুক্ত করাই তাদের কাছে এখন ‘সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।

গাজা সিটির ভেতরে ইসরায়েলি স্থল অভিযানের কারণে পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। নিরীহ বেসামরিক মানুষ ও জিম্মিদের যে মূল্য দিতে হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।

সৌদি আরব ও ফ্রান্স স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, জিম্মি মুক্তি, বন্দি বিনিময়, গাজায় মানবিক সহায়তার পূর্ণ প্রবেশাধিকার ও ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি তারা ঘোষণা দিয়েছে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণে একটি অস্থায়ী আন্তর্জাতিক মিশন পাঠাতে তারা প্রস্তুত। ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনীকে আরও প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে তারা।

বিবৃতিতে গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অধীনে একীভূত করার গুরুত্বও জোর দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সহায়তা ও তত্ত্বাবধানের ভিত্তিতে হামাসকে গাজা শাসন থেকে সরে দাঁড়াতে হবে, অস্ত্র জমা দিয়ে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে নিয়ন্ত্রণ নিতে দিতে হবে।

ফ্রান্স ও সৌদি আরব ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের অঙ্গীকারকে স্বাগত জানিয়েছে। মাহমুদ আব্বাস স্পষ্ট করেছেন যে, ফিলিস্তিন হবে একটি শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র, সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদ প্রত্যাখ্যান করবে, কোনো গোষ্ঠীকে সামরিকীকরণ করবে না ও সবার জন্য উপকারী নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। এছাড়া ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সংস্কার পদক্ষেপ, যেমন- ‘পে-টু-স্লে’ ভাতা বাতিল, শিক্ষাখাতে পরিবর্তন ও যুদ্ধবিরতির এক বছরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতিকে প্রশংসা করেছে তারা।

ইসরায়েলকে সুযোগটি কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, এখনই সময় দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের প্রতি স্পষ্ট জনসমক্ষে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার একইসঙ্গে বসতি স্থাপন কার্যক্রম ও বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা বন্ধ করার দাবিও জানানো হয়।

তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তাদের যুক্তি হলো, এই মুহূর্তে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া আসলে হামাসকে পুরস্কৃত করার শামিল, যা বাকি ৪৮ জন জিম্মির মুক্তি এবং যুদ্ধ শেষ করার প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নেওয়ার বদলে আরও জটিল করে তুলতে পারে।

সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল

এসএএইচ

Read Entire Article