ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক তৌহিদুলের শুধু বদলি নয়, অপসারণ চান কর্মকর্তারা

2 months ago 10

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আগারগাঁও প্রধান কার্যালয়ের সাবেক পরিচালক তৌহিদুল আনোয়ার। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সুবিধাভোগী হিসেবে পরিচিত এই কর্মকর্তা একাধিক ফৌজদারি মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি। রয়েছে ঘুষ-দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার তাকে বরিশালের আঞ্চলিক অফিসে বদলি করা হয়েছে। তবে শুধু বদলি নয়, তাকে চাকরি থেকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচেতন কর্মকর্তা কর্মচারীরা।

বুধবার (০২ জুলাই) আগারগাঁও প্রধান কার্যালয় ও বায়তুল মোকাররম কার্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

বক্তাররা বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত ও পদোন্নতিপ্রাপ্ত, একাধিক ফৌজদারি মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি, দুর্নীতিবাজ ও ধর্ষণে সহযোগী হিসেবে পরিচিত তৌহিদুল আনোয়ারকে শুধু বদলি নয়, চাকরি থেকে অপসারণ ও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।  আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে চাকুর থেকে অপসারণ করতে হবে। এ ছাড়া কীভাবে তৌহিদুল আনোয়ার একাই ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গুরুত্বপূর্ণ ৬টি পদ দখল করেন তার কারণ উদঘাটনসহ তারা অপকর্মও দুর্নীতির তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করারও দাবি তোলেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তৌহিদুল ইসলামের কর্মকাণ্ডের কারণে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের শৃঙ্খলা, ভাবমূর্তি ও কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে প্রায় এক ডজন অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের যথাযথ তদন্ত করে তাৎক্ষণিক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি উঠেছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, তৌহিদুল আনোয়ার দীর্ঘদিন যাবৎ ইসলামিক ফাউন্ডেশনে দায়িত্ব পালনের আড়ালে একধরনের অনৈতিক কর্তৃত্ব ও দুর্নীতির সংস্কৃতি গড়ে তোলেন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আরেফিন সিদ্দিকীর প্রত্যক্ষ শিষ্য ও আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত। ছাত্রলীগ নেতা ও ফাউন্ডেশনের সাবেক ডিজি শামিম আফজালের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় তিনি বছরের পর বছর ফাউন্ডেশন থেকে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক সুবিধা আদায় করেন। এ ছাড়া তৌহিদুল আনোয়ারের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের আদালতে একটি ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন রয়েছে এবং সেই মামলায় চার্জ গঠনও সম্পন্ন হয়েছে। অথচ তিনি এখনো কীভাবে সরকারি চাকরিতে বহাল রয়েছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, ফাউন্ডেশনের অভ্যন্তরে কর্মকর্তাদের মধ্যে গ্রুপিং, ষড়যন্ত্রমূলক আচরণ ও মব কালচারের পরিবেশ তৈরি করেন এই পরিচালক। মহাপরিচালকের স্বাধীনভাবে কাজ করায় তিনি নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন এবং বদলি ও প্রমোশনের ক্ষেত্রেও তার অপপ্রভাব ও চক্রান্ত স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান বলেও জানান তারা।

ফাউন্ডেশনের অধীনে পরিচালিত রাজধানীর মাতুয়াইলের একটি মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ আব্দুর রহিম, আনোয়ারুল ইসলামসহ আজকের মানববন্ধনে অংশ নেওয়া একাধিক শিক্ষক কালবেলাকে বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে তৌহিদুল ইসলাম রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আমাদের ৪০/৫০ জন শিক্ষকের বেতন-ভাতা বন্ধ করে দেন। তার অনিয়ম-দুর্নীতিতে আমরা অতিষ্ঠ ছিলাম। আজ দেড়-দুই বছর আমাদের বেতন বন্ধ। পট পরিবর্তনের পরে সে পালিয়ে গেছে। আমরা তার কঠিন শাস্তি দাবি করছি। পাশপাশি আমাদের বেতন-ভাতা চালু করার দাবি জানাচ্ছি। তবে চেষ্টা করেও এসব অভিযোগের ব্যাপারে পরিচালক তৌহিদুল ইসলামের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Read Entire Article