এক বছরেও শেষ হয়নি রাজশাহীর দুই শিক্ষার্থী হত্যার তদন্ত

1 month ago 8

গত বছরের ৫ আগস্ট রাজশাহীতে আন্দোলনকারীদের ওপর সহিংস হামলার ঘটনায় নিহত হন রায়হান আলী (২৮) ও সাকিব আনজুম (২৭) নামে দুই শিক্ষার্থী। 

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সে ঘটনার এক বছর পূর্ণ হলেও শেষ হয়নি তদন্ত। এ দিকে বিচারের আশায় দিন গুনছে নিহতদের পরিবার।

জানা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট রাজশাহীতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাকিব আনজুম সবুজ নিহত হন। এ ছাড়া আহত হন উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৫০ জন। এদের মধ্যে ৪০ জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৪০ জনের মধ্যে ৩০ জন গুলিবিদ্ধ ছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় চার দিন পর ৮ আগস্ট মারা যান রায়হান আলী।  

নিহত সাকিব আনজুম সবুজ রাজশাহী নগরীর রানীনগর এলাকার মাইনুল হকের ছেলে। তিনি বেসরকারি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। অন্যদিকে, নিহত আলী রায়হান রাজশাহী কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স পাস করেন। তিনি পরবর্তী সময়ে রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

রাজশাহী রেঞ্জ পুলিশের তথ্যমতে, রাজশাহীতে দুই শিক্ষার্থীর হত্যাকাণ্ডসহ গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সহিংসতায় রাজশাহী বিভাগজুড়ে মোট ১২৮টি মামলা হয়। এর মধ্যে হত্যা মামলা ২২টি। হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি ১ হাজার ৯৪৯ জন। এর মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৯০০ জন।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, অভ্যুত্থান-পরবর্তী অস্থিরতার মধ্যে অনেক মামলা করা হয় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে। কোথাও ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন সম্পন্ন হওয়ায় মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ধারণে সমস্যা হয়। আবার কিছু মামলার সুরতহাল প্রতিবেদনের সঙ্গেও দেখা গেছে অসংগতি। এ প্রেক্ষাপটে তদন্তে ধীরগতি দেখা দেয়। পরে রাজশাহী রেঞ্জে একটি মনিটরিং সেল গঠন করে পুলিশ। মনোনীত ১১৮টি গুরুত্বপূর্ণ মামলার তালিকায় রয়েছে ২২টি হত্যা মামলাই। এর মধ্যে মাত্র ছয়টি মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আরও কয়েকটি মামলার প্রতিবেদন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

নিহত শিক্ষার্থী সাকিব আনজুমের বাবা মাইনুল হক বলেন, শুরুর দিকে মামলার তদন্তে গাফিলতি ছিল। তখনকার কর্মকর্তারা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত ছিলেন। তবে এখন যারা আছেন, তারা আন্তরিকভাবে কাজ করছেন। আমরা চাই, প্রকৃত দোষীরা শাস্তি পাক, নিরপরাধ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান কালবেলাকে বলেন, ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণসহ প্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অনেক আসামিকে শনাক্ত করা গেছে। কিছু ভিডিও ফুটেজের ফরেনসিক প্রতিবেদন পেলে তদন্ত শেষ করা যাবে।

রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান কালবেলাকে বলেন, প্রাথমিক তথ্য যাচাই-বাছাই করে আমরা নিশ্চিত হতে চাই, যাতে নিরপরাধ কেউ হয়রানির শিকার না হয় এবং প্রকৃত দোষীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়।

Read Entire Article