একসঙ্গে বেড়ে ওঠা, বিদেশে কাজ ও মৃত্যুর পরও পাশাপাশি দাফন

2 hours ago 4

কয়েক কদম ব্যবধানে দুজনের বাড়ি। ছোটবেলায় একসঙ্গে বেড়ে ওঠা থেকে বন্ধুত্ব। কর্মজীবনেও এই বন্ধুত্বে ছেদ পড়েনি। প্রবাস জীবনে ওমানে একই ঘরে থাকতেন, কাজও করতেন একসঙ্গে। 

সর্বশেষ বাড়ি থেকে ওমানে ফিরেছেন একই ফ্লাইটে। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তাদের মৃত্যু হলো একইসঙ্গে। সর্বশেষ তাদের দাফন হলো পাশাপাশি কবরে।

বলছিলাম, ওমানে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মো. সাহাবুদ্দিন ও মো. বাবলুর কথা। চলতি বছরের ৮ অক্টোবর ওমানের দুখুম সিদরা এলাকায় সাগর থেকে মাছ ধরে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় তারা দুজনসহ আটজনের মৃত্যু হয়। আটজনের মধ্যে সাতজনের বাড়িই সন্দ্বীপ উপজেলায়। বাকি একজনের বাড়ি রাউজান উপজেলায়। 

শনিবার (১৮ অক্টেবর) রাতে তাদের লাশ চট্টগ্রামে পৌঁছায়। পরে রোববার (১৯ অক্টোবর) সকালে সাড়ে সাতটার দিকে স্পিডবোট যোগে সন্দ্বীপ নেওয়া হয়। পরে জানাজা শেষে দুপুর ১২টার দিকে দাফন করা হয়। 

নিহত ব্যক্তিরা হলেন- সারিকাইতের মো. আমিন মাঝি, মো. আরজু, মো. রকি, মো. সাহাবউদ্দিন ও মো. বাবলু এবং মাইটভাঙার মো. জুয়েল ও পৌরসভার  মোশাররফ হোসেন রনি।

স্থানীয়রা জানান, সাহাবুদ্দিন আর বাবলু ছিলেন বাল্যকাল থেকে বন্ধু। বিদ্যালয়ে যাওয়া, বেড়ে ওঠা- সবই একসঙ্গে। একসঙ্গে দুই বন্ধু দেশে এসেছিলেন। ২১ সেপ্টেম্বর একই ফ্লাইটে তারা ওমানে ফিরে গেছেন। দুর্ঘটনাও তাদের আলাদা করতে পারেনি। তাই তো মৃত্যুর পরও তাদের দাফন করা হলো পাশাপাশি কবরে।

সাহাবুদ্দিনের পরিবারে মা-বাবা, স্ত্রী ও চার মাস বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। বাবলুর তিন বছরের ছেলে আর দুই বছরের একটা মেয়ে আছে। 

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন কালবেলাকে বলেন, সকাল সাড়ে সাতটায় বাঁশবাড়িয়া থেকে মরদেহ স্পিডবোট যোগে সন্দ্বীপে আনা হয়। পরে জানাজা শেষে দাফন করা হয়। জানাজাটি জনসমুদ্রে রূপ নেয়। 

তিনি বলেন, সাহাবুদ্দীন আর বাবলুর বন্ধুত্ব ছোটবেলা থেকেই। একসঙ্গে বেড়ে ওঠা থেকে প্রবাসে কাজ করা, আর এখন মৃত্যুর পর পাশাপাশি কবরে দাফনও হলো। দুনিয়াতে একসঙ্গে ছিলেন, পরকালেও তেমনই থাকবেন। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি নিহতদের পরিবারের সদস্যদের যোগ্যতা বিবেচনায় সাতজনের পরিবারের সাতজনকে সরকারি চাকরি দেওয়ার দাবি জানান।

সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মংচিংনু মারমা কালবেলাকে বলেন, সকালে মরদেহ সন্দ্বীপ এসে পৌঁছায়। পরে জানাজা শেষে দাফন করা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করার ও প্রাপ্য তারা সবই পাবেন।

Read Entire Article