টানা এক মাস ধরে চড়া থাকা সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি এলেও, অধিকাংশ সবজির দাম এখনো চড়া। এই সপ্তাহে কয়েকটি সবজির দাম কমলেও, গত সপ্তাহের তুলনায় ডিমের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। তবে মাছ ও মুরগির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) রাজশাহীর সাহেববাজার, লক্ষ্মীপুর ও কাশিয়াডাঙ্গা বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, বাজারে উঠতে শুরু করেছে শীতকালীন শাকসবজি। এর প্রভাবে দীর্ঘদিন পর কয়েকটি সবজির দাম কিছুটা কমেছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে ১৫০ টাকায় বিক্রি হওয়া গোল বেগুন এখন ১২০ টাকা। ১০০ টাকার লম্বা বেগুনের দাম এখন ৮০ টাকা। দাম কমেছে টমেটো, মিষ্টি কুমড়ো, কচুরমুখী, ঝিঙা ও চিচিঙ্গার। ১৪০ টাকার টমেটো এখন ১২০ টাকা, ৬০ থেকে ৭০ টাকার কচুরমুখী, ঝিঙা ও চিচিঙ্গার দাম এখন ৫০-৬০ টাকা।
তবে অপরিবর্তিত অধিকাংশ সবজির দাম। এর মধ্যে গাজর ১৬০ টাকা, শিম ২২০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৭০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, পটোল ৭০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা, পেঁয়াজ ৮০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, আলু ২৫ টাকা ও শসা ৮০ টাকায়ে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কিছুটা বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। গত সপ্তাহের ১৬০ টাকার কাঁচা মরিচের কেজি এখন ২০০ টাকা।
এদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে মাছের মাংসের বাজার। বাজারে রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ থেকে ৩৮০ টাকা, পোয়া মাছ ৬০০ টাকা, মৃগেল মাছ ২৮০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, এক কেজি থেকে কিছুটা বেশি পাঙাশের দাম ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, দেড় কেজির বেশি পাঙাশের দাম ২৫০ টাকা। এছাড়া শিং মাছ সাড়ে ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা। চিংড়ি মাছ ৯০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা। বোয়াল ৮০০-১০০০ টাকা, কোরাল ৮৫০-৯০০ টাকা, আইড় ৭০০-৮০০ টাকা, কাতল ৪৫০ টাকা।
অন্যদিকে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকায়, আর সোনালি মুরগির কেজির জন্য গুনতে হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা। এছাড়া লাল লেয়ার কেজিপ্রতি ৩২০ টাকা ও দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকায়।
ডিমের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে গত সপ্তাহের তুলনায় ডিমের দাম ডজনে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। এক ডজন ব্রয়লার মুরগির ডিমের দাম এখন ১৪০-১৪৫ টাকা। সাদা ডিম ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা।
বাজারে মিনিকেট চাল প্রকারভেদে ৮২ থেকে ৯২ টাকা এবং নাজিরশাইল ৮৪ থেকে ৯০ টাকা, স্বর্ণা ৬২ থেকে ৬৫ টাকা এবং ব্রি২৮ বিক্রি হচ্ছে ৭২ থেকে ৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে আদা ১০০ টাকা, রসুন দেশি ১০০ টাকা, দেশি মশুর ডাল ১২৫ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা, খেসারির ডাল ১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চিনি ১২০ টাকা কেজি, সয়াবিন তেল খোলা ১৬৫, বোতলজাত ১৭৫ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে চলতি সপ্তাহে মাছের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। এছাড়াও গরুর মাংস প্রতিকেজি ৭৫০ টাকা ও খাসির মাংস ১১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
সবজি বিক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, পাইকারি বাজারেই এখন জিনিসপত্র অনেক দামে কিনতে হচ্ছে। আমরা বেশি দামে না বিক্রি করলে তো ক্ষতির মুখে পড়বো।
আরেক বিক্রেতা মোসলেম উদ্দিন জানান, এই মৌসুমে এমনিতেই সবজি কম থাকে। এ কারণে গ্রামের বাজারে সবজির সরবরাহ কমে গেছে। তার ওপর পরিবহন খরচও বেড়েছে। ফলে দামে নিয়ন্ত্রণ রাখা যাচ্ছে না।
সবজির দাম বৃদ্ধিতে সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ক্রেতারা। সাহেব বাজারে কেনাকাটা করতে আসা গৃহিণী সুমি আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এক কেজি বেগুন কিনতে এখন ১০০ টাকা লাগছে। সংসারের বাজার করতে গেলে আগে যেখানে এক হাজার টাকায় হয়ে যেত, এখন লাগে দেড় হাজারেরও বেশি।
সাখাওয়াত হোসেন/কেএইচকে/এএসএম