এস আলম ও সাইফুলের বিরুদ্ধে আরও দুই মামলা করবে দুদক

2 hours ago 1

জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকের আরও ১৬০০ কোটি টাকা ঋণ আত্মসাতের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) মামলা অনুমোদনের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।

তিনি বলেন, ইসলামী ব্যাংক পিএলসির বিভিন্ন শাখা থেকে ভুয়া ও নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করে তা এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা হয়েছে।

টপ টেন ট্রেডিং হাউস মামলা
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, ইসলামী ব্যাংক পিএলসি’র আগ্রাবাদ শাখার আলম ট্রেডিং অ্যান্ড বিজনেস হাউস, শব মেহের স্পিনিং মিলস লিমিটেড ও গোল্ড স্টার ট্রেডিং হাউসের হিসাবে থাকা অর্থ থেকে বিভিন্ন সময়ে মোট ৫৪৪ কোটি টাকা টপ টেন ট্রেডিং হাউসের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। এর মধ্যে ২০২৪ সালের ১ অক্টোবর একদিনেই ৫২১ দশমিক ৫২ কোটি টাকা এস আলম সুপার এডিবল অয়েল, সোনালী ট্রেডার্স, এস আলম ভেজিটেবল অয়েল, এস আলম রিফাইন্ড সুগারসহ এস আলম গ্রুপভুক্ত প্রতিষ্ঠানে জমা করা হয়।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা যোগসাজশে এভাবে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিং করেছেন।

এ মামলার আসামিরা হলেন— এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল মাওলা, সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আকিজ উদ্দীন, সাবেক ইভিপি মিফতাহ উদ্দীন, শব মেহের স্পিনিং মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মশিউর রহমান এবং পরিচালক মোহাম্মদ শওকত উসমান, টপ টেন ট্রেডিং হাউসের প্রোপ্রাইটর মো. আলমাছ আলী, গোল্ড স্টার ট্রেডিং হাউসের প্রোপ্রাইটর বেদারুল ইসলাম, এবং আলম ট্রেডিং অ্যান্ড বিজনেস হাউসের প্রোপ্রাইটর নূরুল আলম।

আদিল করপোরেশন মামলা
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, ভুয়া প্রতিষ্ঠান আদিল করপোরেশনের নামে প্রথমে ৪০০ কোটি টাকার ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। পরে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ঋণসীমা বাড়ানো হয়, তা দাঁড়ায় ১২৮১ দশমিক ৪৫ কোটি টাকায়। শুধু ২০২২ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ২৯টি ডিলের মাধ্যমে ১০৭৭ দশমিক ১১ কোটি টাকা ৯টি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে ঋণ দেওয়া হয়, যা পরে এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা হয়।

মামলার আসামিরা হলেন— এস আলম গ্রুপ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, আদিল করপোরেশন স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ মোস্তান বিল্লাহ আদিল, এস আলম কোল্ড রুলড স্টীলস লিমিটেডে এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আব্দুস সামাদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওসমান গনি, এস আলম গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসান, গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশনের মালিক রাশেদুল আলম, ইনফিটি সি আর স্ট্রিপস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের হিসাব পরিচালনাকারী আশরাফুল আলম, এস আলম গ্রুপের পরিচালক ফারজানা পারভীন, মেসার্স জেনেসিস এন্টারপ্রাইজ, মালিক আহসানুল আলম, মেসার্স মায়মুনা ট্রেডিংয়ের মালিক মায়মুনা খানম, চেমন ইস্পাত লিমিটেডের চেয়ারম্যান শারমিন ফাতেমা, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের সাবেক ডিএমডি মিফতাহ উদ্দীন, সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সাব্বির, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহবুব উল আলম, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল মাওলা, সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ কায়সার আলী, সাবেক এসভিপি সিলেট জোনের মোহাম্মদ এহসানুল ইসলাম, ইসলামী ব্যাংক পিএলসি সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আইটি প্রধান মোহাম্মদ সিরাজুল কবির, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের সাবেক এসভিপি সিলেট জোনের তাহের আহমেদ চৌধুরী, ডিগনিটি বিজনেস হাউসের মালিক মো. সাইফুদ্দীন, ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সের মালিক মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী, মেসার্স মিনহাজ করপোরেশনের মালিক এমদাদুল ইসলাম (মিনহাজ), জিনিয়াস ট্রেডিংয়ের মালিক মোহাম্মদ আবুল কালাম, ক্রাফট বিজনেস অ্যান্ড ট্রেডিং হাউসের মালিক মো. তারিকুল ইসলাম চৌধুরী, এপারচার ট্রেডিং হাউসের মালিক এস এম নেছার উল্লাহ, মেসার্স দুলারী এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. ছাদেকুর রহমান, ইউনিক ট্রেডার্স অ্যান্ড বিজনেস হাউসের মালিক মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম চৌং, মেসার্স আনসার এন্টারপ্রাইজের মালিক আনছারুল আলম চৌধুরী, গ্রীন এক্সপোস ট্রেডার্সের মালিক এম এ মোনায়েম, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের সাবেক এসভিপি বরিশাল জোনের মো. মনজুর হাসান, আইআইএস কনসালটিং বিডি লিমিটেডের এমডি ও চিফ সার্ভেয়র মো. ওয়াহিদুর রহমান।

ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর এস আলমের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ইসলাম ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় এস আলমের নামে একাধিক মামলা করেছে দুদক।

এসএম/এমএএইচ/জেআইএম

Read Entire Article