ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে শিল্পবান্ধব কর ব্যবস্থা প্রণয়নে এসএমই ফাউন্ডেশন আসন্ন বাজেটে একগুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও সরকারের অন্যান্য সংস্থার কাছে এ প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।
প্রস্তাবনায় মূসক সংক্রান্ত ৩১টি, আয়কর সংক্রান্ত ৩৫টি, শুল্ক সংক্রান্ত ৬৯টি, আবগারি শুল্ক সংক্রান্ত ৩টি সহ ২টি সাধারণ প্রস্তাব রয়েছে। সারাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন সমিতি, গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি পরামর্শ সভা ও কর্মশালা থেকে ৩০০টি প্রস্তাবের মধ্যে থেকে ওই ১৪০টি প্রস্তাব চূড়ান্ত করে প্রাক-বাজেট সভায় দাখিল করা হয়েছে।
সাধারণ প্রস্তাবনার মধ্যে জাতীয় শিল্পনীতি-২০২২ অনুযায়ী কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সংজ্ঞা নির্ধারণ এবং এই খাতের জন্য পৃথক কর ও শুল্ক বিধান প্রণয়নের কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি এসএমই খাতের বিকাশের লক্ষ্যে উদ্যোক্তাদের জন্য একটি পৃথকীকৃত ভ্যাট, আয়কর এবং শুল্ক সংক্রান্ত বিধি বিধান প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।
মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক সংক্রান্ত প্রস্তাবনায়, পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে টার্নওভার ট্যাক্স তুলে নেওয়ার এবং শিল্পের আকার অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট কর আরোপের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়াও ওয়ার্কশপ ও রিপেয়ার শপের জন্য ভ্যাট নির্ধারণ এবং আদর্শ মূসকের হার ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
- মিরপুরের বেনারসি পণ্যের বহুমুখীকরণে সহায়তা করছে এসএমই ফাউন্ডেশন
- এসএমই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে এনএসডিএ ও বিটিবির সমঝোতা স্মারক সই
এছাড়াও উৎপাদনমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান, যাদের বাৎসরিক আমদানি মূল্য ৫ কোটি টাকার কম, তাদের কাঁচামাল আমদানিতে আগাম কর আদায়ের হার ৩ শতাংশের পরিবর্তে ১ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে ফাউন্ডেশন। কৃষি ক্ষেত্রের কিছু কিছু যন্ত্রপাতি আমদানি পর্যায়ে আগামকর অব্যাহতি পাচ্ছে, তাতে রাইচ ট্রান্সপ্লান্টার, পটেটো প্লান্টার, কীটনাশক স্প্রেয়ার, সিড ড্রায়ার ইত্যাদি যুক্ত করার প্রস্তাব করাসহ মোট ৩১টি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক প্রসঙ্গে।
আয়কর সংক্রান্ত প্রস্তাবনায় উৎস কর কর্তন সংক্রান্ত যে কোনো নন-কমপ্লায়েন্সের জন্য খরচ ডিজঅ্যালাও করার বিধান বিলুপ্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফ্রি সেম্পল বিতরণে শিল্পভেদে বৈষম্য দূর করা, উৎসে কর কর্তন, বিভিন্ন শিল্পের জন্য কর অবকাশ এবং করের হার নির্ধারণের বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছে ওই প্রস্তাবে।
এছাড়া কাস্টমস আইন ২০২৩ এবং শুল্ক সংক্রান্ত প্রস্তাবনায়, দেশীয় শিল্পের সুরক্ষার জন্য কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি ও কমানোর কথা বলা হয়েছে।
এসএমই ফাউন্ডেশন তাদের প্রস্তাবনায় এই খাতের উন্নয়নে নিয়মিত বাজেট বরাদ্দের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছে। এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, প্রস্তাবনার মূল লক্ষ্য হলো এসএমই-বান্ধব কর ব্যবস্থা প্রণয়ন, যা এই খাতের বিকাশকে ত্বরান্বিত করবে। এর আগে সরকারের কাছে ৫৫৭টি প্রস্তাবনা পেশ করেছে এ ফাউন্ডেশন, যার মধ্যে ৮৫টি আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে গৃহীত হয়েছে। এই প্রস্তাবনাগুলোতে মূসক, আয়কর, শুল্ক ও আবগারি শুল্ক সম্পর্কিত বিভিন্ন সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এনএইচ/ইএ/এমএস