ওমরা ভিসা থাকায় ট্রেন থেকে ছিনতাই হওয়া ওমরাহযাত্রী সেই মা-ছেলের পাসপোর্ট ও ভিসা ফেরত দিয়েছে ছিনতাইকারী। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বকবৃন্দ, গণমাধ্যমকর্মী এবং স্থানীয়দের সহযোগিতায় তা উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ থানা পুলিশ।
রোববার (১ ডিসেম্বর) রাতে সেই ছেলের হাতে উদ্ধার হওয়া পাসপোর্ট ও ভিসা তুলে দেওয়া হয়।
এতে ওমরাহ পালনের অনিশ্চয়তা অনেকটা কেটে গেল মা তাহমিনা বেগম এবং ছেলে তৌহিদুল ইসলামের।
ভুক্তভোগী তৌহিদুল ইসলাম কালবেলাকে জানান, ছিনতাই হওয়া ব্যাগের ভেতরে থাকা মোবাইল ফোনে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ছিনতাইকারীরা ফোনকল রিসিভ করে। একপর্যায়ে কথোপকথনে শুধু পাসপোর্ট ভিসা নির্দিষ্টস্থানে ফেরত দেওয়ার কথা স্বীকার করলে স্থানীয় সমন্বয়ক, গণমাধ্যমকর্মী এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় সেগুলো উদ্ধার করে আমার হাতে তুলে দেন। আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
স্থানীয় শিক্ষানুরাগী মুন্জুরুল হাসান বলেন, ছিনতাই হয়ে যাওয়া পাসপোর্ট ভিসা ফেরত পেয়ে ওমরাহযাত্রী মা ও ছেলে যে ওমরাহ করতে যেতে পারছে এজন্য আল্লাহর কাছে অশেষ ধন্যবাদ জানাই, আলহামদুলিল্লাহ। চোরেরও যে ধর্ম আছে এটাও এ ঘটনায় প্রমাণিত। কেননা এক সময় আমরা শুনতাম চোরের কোনো ধর্ম নেই। চোর তো চোরই। না এখানে এটা ফিরিয়ে দিয়ে সে প্রমাণ করল চোরেরও ধর্ম আছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ইসলাম বলেন, ছিনতাইকারীর সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে টাকার চেয়েও পাসপোর্ট ভিসা, কাগজপত্র অনেক বেশি জরুরি বলে অনুরোধ করলে সে প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া শর্ত দিয়ে সেগুলো পরিত্যক্ত জায়গায় ফেলে দিয়ে চলে গেলে কামারখন্দের সার্কেল এসপি স্যারের সহযোগিতায় স্থানীয়দের নিয়ে সেগুলো উদ্ধার করে ভুক্তভোগীর হাতে তুলে দেই।
কামারখন্দ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক সাগর আহমেদ বলেন, ওমরাহযাত্রী মা-ছেলের পাসপোর্ট ভিসা, নগদ টাকা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিনতাইয়ের খবরটি শুনে আমরা প্রশাসন ও স্থানীয়দের সহায়তায় শুধু পাসপোর্ট ভিসা উদ্ধার করে দিতে পেরে সত্যিই অনেক খুশি। এসময় সমন্বয়ক মুমিত সেখ, সাকিব মাহবুব এবং স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে জামতৈল রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার ইসমাইল হোসেন কালবেলাকে বলেন, শনিবার রাতে নীল সাগর এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এরপর ভুক্তভোগীরা সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে থানায় যোগাযোগ করলে কামারখন্দ প্রশাসন ও সমন্বয়কদের সহযোগিতায় রোববার রাতে পাসপোর্ট ভিসা উদ্ধার করে ভুক্তভোগীর হাতে তুলে দেন। আমরা বিষয়টি কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছি। তারা স্টেশনের নিরাপত্তা বাড়াবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে কামারখন্দ থানার ওসি মোখলেসুর রহমান কালবেলাকে বলেন, আমরা অভিযোগ পাওয়ার পর পরই কামারখন্দ থানার সার্কেল এসপির নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের সহযোগিতায় দ্রুত খোয়া যাওয়া পাসপোর্ট ভিসা উদ্ধার করে ভুক্তভোগীর হাতে তুলে দিতে পারছি। অন্যান্য খোয়া যাওয়া জিনিসপত্র উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাত আড়াইটায় ঢাকাগামী নীল সাগর এক্সপ্রেস ট্রেন কামারখন্দের জামতৈল রেলওয়ে স্টেশনে ক্রসিংয়ের জন্য অবস্থানকালে ওমরাহ পালন যাত্রী মা-ছেলের পাসপোর্ট ভিসা, নগদ টাকা এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছিনতাই হয়।