কাজাখস্তানে বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু বেড়ে ৩৮ জনে দাঁড়িয়েছে। সর্বশেষ পরিসংখ্যানে আলজাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে। এ ছাড়া ভেঙে পড়া বিমান থেকে তিন শিশুসহ ২৭ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। বিমানবন্দরের নিকটবর্তী হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা চলছে।
আহতদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তাই ধারণা করা হচ্ছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। অপরদিকে নিখোঁজদের উদ্ধার অভিযান চলছে।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) কাজাখস্তানের আকতু শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে আছড়ে পড়ে আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের ইআরজে-১৯০ বিমান। ওই বিমানে মোট ৬৭ জন ছিলেন। তাদের মধ্যে ৬২ জন যাত্রী এবং পাঁচজন বিমানকর্মী।
বিমানটির গন্তব্য ছিল রাশিয়া। স্থানীয় সময় ভোর ৩টা ৫৫ মিনিটে আজারবাইজানের বাকু থেকে রাশিয়ার চেচনিয়া প্রদেশের গ্রজনির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল ওই বিমান। কিন্তু মাঝ আকাশে পাইলট খবর পান, গ্রজনিতে ঘন কুয়াশা রয়েছে। তাই সেখানে বিমান অবতরণে সমস্যা হতে পারে।
এরপর কাজাখস্তানের আকতুতে ওই বিমানের জরুরি অবতরণ করানোর চেষ্টা করা হয়। সংশ্লিষ্ট বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের অনুমতিও চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই পাইলট বিমানের নিয়ন্ত্রণ হারান।
কাজাখস্তান সরকার জানিয়েছে, কাসপিয়ান সাগরের পূর্ব উপকূলে বিমান ভেঙে পড়ার পর যে আগুন লেগেছিল, দমকলকর্মীরা তা নিয়ন্ত্রণে আনেন। তারপর বিমানের ভেতর থেকে যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়। তিন শিশুও উদ্ধারের তালিকায় রয়েছে। তবে যে ২৭ জনকে বিমান দুর্ঘটনার পর উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের সবার অবস্থাই ‘অত্যন্ত আশঙ্কাজনক’।
ঘন কুয়াশার কারণেই জরুরি অবতরণের চেষ্টা কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। রাশিয়ার কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে অন্য কিছু কারণও উঠে এসেছে। কেউ কেউ দাবি করছেন, বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি হয়েছিল। সে কারণে পাইলট জরুরি অবতরণের সিদ্ধান্ত নেন। অনেকে আবার দাবি করছেন, মাঝ আকাশে একঝাঁক পাখির সঙ্গে ধাক্কার ফলে বিমানটি জরুরি অবতরণ করাতে বাধ্য হন পাইলট।
বিমান দুর্ঘটনার ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, মাটিতে আছড়ে পড়ার আগে বেশ কয়েক মিনিট আকাশে ‘বিভ্রান্ত’ হয়ে ঘুরপাক খেয়েছে বিমানটি। বিমানবন্দর থেকে কিছুটা দূরে আকাশে ক্রমাগত চক্কর কাটতেও দেখা যায়। অন্তত তিন মিনিট ‘বিভ্রান্ত’ হয়ে ঘোরার পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তা একটি খোলা জায়গায় আছড়ে পড়ে।