কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা ও রাসুলের (সা.) অবমাননাকারীর শাস্তি মৃত্যুদণ্ড আইন প্রণয়নের দাবিতে আগামী ১৫ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণবিস্ফোরণ ঘটবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন সম্মিলিত খতমে নবুওয়াত পরিষদের আহ্বায়ক ও খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ কমিটি বাংলাদেশের আমির আল্লামা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর।
সোমবার (২০ অক্টোবর) সাভার উপজেলা মডেল মসজিদ মিলনায়তনে সম্মিলিত খতমে নবুওয়াত পরিষদ ঢাকা জেলা উত্তরের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, হযরত মুহাম্মাদ (সা.) সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও রাসুল। তারপরে নতুন করে কেউ নবী-রাসুল হিসেবে আগমন করবেন না। এটা কুরআন-সুন্নাহ ও ইজমা-কিয়াসের সর্বসম্মত বক্তব্য। এটাই ইসলামের মৌলিক আকিদা ও বিশ্বাস। যারা এটা অস্বীকার করবে কিংবা সন্দেহ পোষণ করবে নিঃসন্দেহে তারা কাফের। তাদেরকে যারা কাফের বলবে না, তারাও কাফের।
প্রবীণ এই আলেম বলেন, তথাকথিত ‘আহমদীয়া মুসলিম জামাত’ নামধারী কাদিয়ানীরা নিজেদের মুসলিম দাবি করলেও উল্লিখিত বিশ্বাসটি অস্বীকার করে। তারা ভারতে জন্ম নেওয়া গোলাম আহমদ কাদিয়ানীকে নিজেদের নবী ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করে। ফলশ্রুতিতে তারা ইসলামের মৌলিক আকিদা-বিশ্বাস থেকে বের হয়ে গেছে। অনতিবিলম্বে তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে।
পীর সাহেব মধুপুর বলেন, রাসুলকে (সা.) অবমাননাকারীর শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করে আইন পাস করতে হবে। কোনো কুলাঙ্গার যেন তার সম্পর্কে কটূক্তি করার দুঃসাহস না পায়। কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবি আদায়ে আগামী ১৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আন্তর্জাতিক খতমে নবুওয়াত মহাসম্মেলন বাস্তবায়নে তিনি সবার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
ব্যাংক কলোনি মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন যাদুরচর মাদ্রাসার মুহতামিম হাফেজ মাওলানা আলী আকবর কাসেমী।
মুফতি নাজমুল হাসান বিন নুরী ও মুফতি মাহফুজ হায়দার কাসেমীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব বলেন, ইসলামের নামে কাদিয়ানীদের সকল প্রকাশনা, প্রচার-প্রচারণা নিষিদ্ধ করতে হবে। ইসলামী পরিভাষা ব্যবহার করা অমুসলিমদের জন্য সম্পূর্ণ অবৈধ। অতএব ইসলামের সকল পরিভাষা যেমন কালিমা, নামাজ, রোজা, হজ, যাকাত, মসজিদ, আজান, ইকামত, নবী, মাহদী শব্দ ইত্যাদি তাদের জন্য সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে।
এ সময় আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের মহাসচিব ও সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের সদস্য সচিব মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী বলেন, ১৫ নভেম্বরের মহাসম্মেলন সফলে খতিব সাহেবরা এখন থেকেই প্রতি জুমার আলোচনায় সাধারণ মুসলমানদের কাদিয়ানীদের অপতৎপরতা সম্পর্কে সতর্ক করবেন। প্রত্যেকে নিজ নিজ জায়গা থেকে অনলাইন প্রচারে অংশগ্রহণ করা। ইউনিয়ন, থানা ও জেলা পর্যায়ে জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে নিয়মিত দাওয়াতি কার্যক্রম ও ঝটিকা সফর পরিচালনা করতে হবে।
বক্তব্য রাখেন মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, মুফতি মোহাম্মাদ আলী আফতাবনগর, মাওলানা আশিকুর রহমান কাসেমী, মাওলানা আব্দুল মান্নান পাটোয়ারী, মাওলানা ইউসুফ সাদিক হক্কানী, মুফতি সাঈদ নূর, মাওলানা আনওয়ার হোসাইন কাসেমী, মুফতি সাঈদ আহমাদ লাকসামী, মাওলানা আলী আজম, মুফতি আব্দুল বারী আমিনবাজার, মুফতি আলী আশরাফ তৈয়ব, মুফতি মাহবুবুর রহমান নবাবগঞ্জী, মুফতি আমিনুল ইসলাম কাসেমী, মুফতি সানাউল্লাহ ও মুফতি আবুল হোসাইন ধামরাই, মাওলানা ফারুক হোসাইন, মাওলানা বাহাউদ্দীন, মাওলানা আবু সাঈদ, মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী, মুফতি মাহমুদ হাসান হাবিবী প্রমুখ।