সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন ও অনিয়মের মাধ্যমে সোহাগপুর কাপড়ের হাট ইজারা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে সাবেক মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজার বিরুদ্ধে। এ অভিযোগের তীর থেকে বাদ যায়নি সদ্য বিদায়ী বেলকুচি পৌরসভার প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) লিটুস লরেন্স চিরান ও বর্তমান প্রশাসক ও বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিয়া সুলতানার নাম।
গত ১৩ নভেম্বর এই তিন জনের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত একটি অভিযোগ দিয়েছেন পৌরসভার দেলুয়া মহল্লার সুরমান আলীর ছেলে মামুন হোসেন। তিনি স্থানীয় পৌর বিএনপির নেতা বলে জানা গেছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, বাংলা ১৪৩১ সালের জন্য বেলকুচি পৌরসভার অধীনে সোহাগপুর কাপড়ের হাটটি স্থানীয় খোদা বক্স প্রামানিককে দুই কোটি ৩৩ লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু এ ইজারা দেওয়ার ক্ষেত্রে সাবেক মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের হাট বাজার ইজারা সংক্রান্ত নীতিমালা ভঙ্গ করে ইজারা মূল্য, সরকারি রাজস্ব ও ট্যাক্সের প্রায় অর্ধকোটি টাকা আদায় না করেই অবৈধভাবে হাটটি তাকে ইজারা দেন। ওই সময় এই অনিয়মের বিষয়ে ইজারায় অংশগ্রহণকারী একাধিক দরদাতা সাবেক মেয়রসহ দরপত্র কমিটিকে বারবার অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো অভিযোগকারী ব্যবসায়ীদের হুমকি দিতেন মেয়র। ফলে ওই সময়ে তারা আর কোনো উদ্যোগ নেননি।
কিন্তু বর্তমানে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার মেয়র অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ দিলে তারা পুনরায় এ অভিযোগ তোলেন।
অভিযোগকারী মামুন হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ওই ইজারা বাতিলসহ অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সাবেক মেয়র ও প্রশাসকের দ্বায়িত্ব পালনকারী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে প্রয়োজনে তারা আদালতের দ্বারস্থ হবেন।
সাবেক বেলকুচি পৌরসভার প্রশাসক ও বর্তমান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) লিটুস লরেন্স চিরান বলেন, আমি গত ৫ আগস্টের পর স্বল্প সময়ের জন্য ওই পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এই অনিয়মের বিষয়টি দেখেছি। এর প্রেক্ষিতে সাত দিনের সময় দিয়ে হাটের ইজারাদারকে নোটিশ করেছিলাম। শুধু তাই না, বেশ কিছু টাকাও আদায় করেছি।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, জরুরি প্রয়োজনে ঢাকায় রয়েছি। এজন্য অভিযোগের বিষয়টি এখন আমি অবগত নই। তবে দ্রুতই বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাবেক পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা সরকার পতনের পর আত্মগোপনে থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এম এ মালেক/এফএ/এএসএম