লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে গণকবরের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলামকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। বুধবার (২৭ নভেম্বর) উপজেলা প্রশাসন ও বিশেষ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়।
তবে শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) বিষয়টি জানাজানি হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দৈনিক কালবেলা ‘গণকবরস্থানের টাকাও আত্মসাৎ!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
সূত্রে জানা গেছে, রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে বিশেষ গণকবর হওয়ার কথা। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ধরা হয় গণকবরে। ওই প্রকল্পের কাজ এক বছরেও সম্পন্ন করতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। অথচ প্রকল্পের সমপরিমাণ বিল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন বলে জানান স্থানীয়রা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, গণকবরের প্রবেশ পথে বিশাল ভুলুয়া নদী। যেখানে যেতে বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা। গণকবরের চারদিকে নেই কোনো ঘনবসতিও। রাস্তা ও ব্রিজ না করে গণকবর করায় এলাকাবাসীর মাঝে প্রশ্নের শেষ নেই।
স্থানীয় আতিকুল ইসলাম, রইজুল, হুমায়ুন কবির ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, যে স্থানে গণকবর দেওয়া হয়েছে সেখানে মৃত মানুষ নিতে অনেক সমস্যা রয়েছে। বর্ষা মৌসুমেও গণকবরে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। উপজেলা প্রশাসন প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করতে এমন মহাপরিকল্পনা করেছেন।
তারা আরও বলেন, প্রকল্পের কাজ অসমাপ্ত রেখে কীভাবে বিল-ভাউচারে স্বাক্ষর করেন। উপজেলা ইউএনও এবং পিআইওর যোগসাজশে প্রকল্পের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে সম্পূর্ণ দুর্নীতি-অনিয়ম করেছেন। তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত গণকবরের আশপাশে পুনরায় কাজ করতে জনপ্রতিনিধিদের আনাগোনা দেখা গেছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, গণকবরের কাজ চলার সময় আমি দেশের বাইরে হজে ছিলাম। বিষয়টা কী হয়েছে না হয়েছে আমি জানি না। আমি একটু অবগত হই; আমি রোববার অফিসে গেলে আপনারাও আসেন।
স্ট্যান্ড রিলিজের বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করে বলেন, লক্ষ্মীপুর থেকে আমাকে কুমিল্লায় দেওয়া হয়েছে। অফিস অর্ডার মানতে তো হবেই।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মো. আমজাদ হোসেন কালবেলাকে বলেন, উপকূলীয় মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা ভেবে গণকবর করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। পর্যায়ক্রমে সব ইউনিয়নেই এমন সামাজিক অতিগুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম চলবে। অতিদ্রুতই ওই প্রকল্পের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করা হবে। এ ছাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) এমন অসমাপ্ত কাজের বিষয়টি আমাকে অবহিত করেননি। সত্যিই বিষয়টি দুঃখজনক।