কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় প্রবাসীর মৃত্যু, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর আকুতি
কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় কিশোর গ্যাংয়ের বেধড়ক মারধরে আহত প্রবাসী স্বপন ভূইয়া (৩৫) মারা গেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত স্বপন ভুইয়া উপজেলার জগৎপুর ইউনিয়নের ওমরপুর গ্রামের সোবহান ভুইয়ার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্বপন ভুইয়া প্রায় এক বছর আগে কুয়েত থেকে দেশে ফেরেন। ওমরপুর গ্রামের শান্তি মিয়ার ছেলে আসিফের নেতৃত্বে স্বপ্নপূরণ ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ হয়। এই সংগঠনের নামে স্বপনকে ইয়াবা বিক্রির অভিযোগ দিয়ে বারবার চাঁদা চাইত আসিফ। আড়াই মাস আগে সালিশি বৈঠকে স্বপনের নামে করা অভিযোগ ভুল প্রমাণিত হলে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় আসিফকে।
গত ৩১ অক্টোবর রাতে স্বপনকে ইয়াবা বিক্রি ও সেবনের অভিযোগ এনে আসিফের নেতৃত্বে রাহিম, বাবু, দিপু, নাজমুল, রোকন, রাকিব, সাইদুলসহ ২০ থেকে ৩০ জনের কিশোর গ্যাং কয়েক দফা মারধর করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া ইস্টার্ন কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহতের স্ত্রী মরিয়ম আক্তার অভিযোগ করে বলেন, চাঁদা না দেওয়ায় আমার স্বামীকে বিনা দোষে নির্মমভাবে বেদম পিটিয়ে মেরে ফেলেছে আসিফ ও নাজমুলসহ কিশোর গ্যাং সদস্যরা। এর আগেও আমার স্বামীর কাছ থেকে ব্ল্যাকমেল করে একাধিকবার টাকা নিয়েছে।
আকুতি করে তিনি বলেন, আমি এখন ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আমার আট বছর বয়সী একটি সন্তান আছে। আমার সব শেষ হয়ে গেল। যারা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে, আমি তাদের গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ বলেন, নিহত ব্যক্তির বোন আয়েশা আক্তার বাদী হয়ে বুধবার রাতে ২৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। ঘটনায় জড়িতদের ধরার জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।