কুড়িগ্রামে সড়কের কাজ ফেলে ঠিকাদার লাপাত্তা, চলাচলে ভোগান্তি

12 hours ago 5
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ১২ কিলোমিটারের একটি সড়কের সংস্কার কাজ শুরুর দুই মাসের মধ্যে কাজ বন্ধ করে উধাও হয়েছেন সাব-ঠিকাদার। কাজ বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। এ নিয়ে প্রধান ঠিকাদারকে উপজেলা প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলী একাধিকবার চিঠি দিলেও জবাব দেননি তিনি।  সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজারহাট থেকে আনন্দ বাজার ১২ কিলোমিটার সড়কটি নির্মাণের পর একবার মাত্র সড়কটির সংস্কার করা হলেও আর করা হয়নি। ২০২৩ সালে সড়কটির সংস্কার কাজের টেন্ডার করেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আরসিআইপি (রুরাল কানেকটিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট)। কাজের ব্যয় মূল্য ১৭ কোটি ৬৬ লাখ ৬০ হাজার ৩৬৫ টাকা ধরা থাকলেও প্রায় ১৬ শতাংশ লেসে ১৪ কোটি ৪৯ লাখ ৪৬ হাজার ১০ টাকায় নিয়ে চুক্তিবদ্ধ হন রংপুরের ঠিকাদার খায়রুল কবির রানা। চুক্তির শর্তানুযায়ী ২০২৬ সালের ৩০ জানুয়ারি কাজটি সমাপ্তির কথা ছিল।  সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা সদর বাজারের সোনালী ব্যাংক মোড় থেকে উপজেলার উমর মজিদ ইউনিয়নের ফরকেরহাট বাজারের ওপর দিয়ে উলিপুর-কুড়িগ্রাম সড়কের সঙ্গে সংযোগ সড়কটি দুই উপজেলার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১২ কিলোমিটারের এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য যানবাহন এবং পথচারী চলাচল করে।  এ ছাড়া উপজেলার উমর মজিদ ইউনিয়ন থেকে রাজারহাট উপজেলা সদরে যাতায়াতের অন্যতম সড়ক এটি। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় সড়কটির বিভিন্ন অংশে পিচ ও খোয়া উঠে বড় বড় গর্ত এবং খানাখন্দে ভরে গেছে। এর মধ্যে রাস্তা খুঁড়ে রাখায় এবং পুরাতন রাস্তার ইট-পাথর উল্টে রাখায় চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে সড়কটি।  স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল কাদের বলেন, সড়কটি এখন চলাচলের অনুপযোগী হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। এতে অন্তত ১৫ গ্রামের ৩০ হাজার মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত কাজ শেষ করলে জনগণের উপকার হবে। এ বিষয়ে জানতে সাব-ঠিকাদার রনি ও আবু-শামার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। ঠিকাদার খায়রুল কবির রানা কাজ বিক্রির কথা অস্বীকার করে বলেন, আমার লাইসেন্সে ঠিকাদার রনি এই কাজটি করার কথা থাকলেও বিভিন্ন স্থানে তার একাধিক কাজ চলমান থাকায় দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার সুবিধার্থে পরে আমি কাজটি আবু শামাকে করতে বলি। আবু শামা কাজ শুরু করার পর উপজেলা প্রকৌশলী তাকে অহেতুক হয়রানি করতে থাকেন।  তিনি আরও বলেন, একটি কাজ দেখার জন্য ৪/৫ জন করে ওয়ার্ক অ্যাসিস্টেন্ট পাঠান, প্রতিদিন এতগুলো লোকের অনারিয়াম দিয়ে কাজ করা কঠিন। এ ছাড়া প্রথম শ্রেণির ইট দেওয়া সত্ত্বেও তিনি ইট পছন্দ করেন না। আমরা যেভাবে কাজ করি সেটা ওনার পছন্দ না। উনি উনার মনগড়া নিয়মে কাজ করে নিতে চান। ফলে কাজ করা সম্ভব হয়নি। রাজারহাট উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল রানা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের কাজটি মূল ঠিকাদার দুবার হাত বদলের কারণে উঠাতে পারছেন না। গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঠিকাদার আবু শামা কাজটি শুরু করে কিছু না জানিয়েই ১০ নভেম্বর বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে কাজের আনুমানিক ৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক, কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং আমার দপ্তর থেকে প্রধান ঠিকাদার খায়রুল কবির রানাকে চিঠি দেওয়া হলেও তিনি জবাব দেননি।
Read Entire Article