খুবির ছয় গবেষণা প্রকল্পে বরাদ্দ ২৬ কোটি

2 days ago 9

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ‘হায়ার এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (হিট)’ প্রকল্পের আওতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ৬টি গবেষণা প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মোট বরাদ্দ হয়েছে ২৬ কোটি টাকা। 

বুধবার (০৩ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান এ তথ্য জানান। 

তিনি বলেন, ‘এ প্রকল্পের মাধ্যমে সমাজ, স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞানের নানা সমস্যার টেকসই সমাধান খোঁজার চেষ্টা করা হবে। তরুণ গবেষকদের আগ্রহ বাড়ানোর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে একটি গবেষণা সংস্কৃতি গড়ে উঠবে। এই প্রকল্প শুধু শিক্ষক, ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সমাজের চরম উন্নতি সাধন হবে বলে আমি মনে করি।

জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘হায়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (হিট)’ শীর্ষক প্রকল্পের কম্পোনেন্ট ২.২-এর আওতায় উন্মুক্ত প্রতিযোগীতার মাধ্যমে শর্ত পূরণকারী বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে এটিএফ মঞ্জুরি প্রদান করা হবে। এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে প্রাপ্ত এটিএফ প্রস্তাবসমূহ মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে মঞ্জুরি প্রদানের লক্ষ্যে উইন্ডো-১, উইন্ডো-২ এবং উইন্ডো-৩এ-এর আওতায় উপ-প্রকল্পের নির্বাচিত তালিকা ইউজিসি-বিএটিএফ-এর ষষ্ঠ সভায় অনুমোদন করা হয়েছে।

অনুমোদিত প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য জন্য সুপারভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন- ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলাম রাকিব্বু, ফার্মেসি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. উৎপল কুমার কর্মকার ও ড.মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল, ইংরেজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. এ আর এম মোস্তাফিজুর রহমান, ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসার্চ টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. অলোকেশ কুমার ঘোষ।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. এ আর এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো বিশ্ববিদ্যালয় একটি ল্যাব স্থাপন করা এবং শিক্ষকদের সমন্বয়ে একটি রিসার্চ ক্লাস্টার গড়ে তোলা। ক্ষুদ্র-নৃগোষ্টীর ভাষা নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী গবেষকদের নিয়ে এটি পরিচালিত হবে। 

অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ছাদ্রী ও ক্রুক ভাষাকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করাই তার গবেষণার প্রধান উদ্দেশ্য। প্রকল্পগুলো ২০২৮ সালের ৩০ জুন শেষ হবে বলে জানান তিনি। 

তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পের মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন ঘটবে। নবীন গবেষকদের জন্য ওয়ার্কশপের ব্যবস্থা থাকবে এবং তাদেরকে গবেষণার এপ্রোচ, মেথড ও টেকনিক বিষয়ে ধারণা দেওয়া হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য বৃহৎ পরিসরে গবেষণা করা প্রয়োজন। হিট প্রজেক্টের মাধ্যমে সেই সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার পরিধি ও গভীরতা বাড়াবে এবং সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

তিনি বলেন, প্রজেক্ট পরিচালনায় শিক্ষকদের দায়বদ্ধ থাকতে হবে। কারণ এ অর্থ বিশ্বব্যাংকের ঋণ থেকে এসেছে, যা দেশের সাধারণ মানুষের ভ্যাট-ট্যাক্সের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে। তাই গবেষণার অর্থ যেন যথাযথভাবে ব্যবহার হয় এবং মানুষের উপকারে আসে- সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

উল্লেখ্য, হিট প্রকল্পের অধীনে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষক ও গবেষকদের কাছ থেকে প্রকল্প প্রস্তাব আহ্বান করা হয়। এতে ১ হাজার ৪৮১টি প্রস্তাব জমা পড়ে। যাচাইবাছাই শেষে ১৫১টি প্রজেক্ট অনুমোদন দেওয়া হয়। পাঁচ বছর মেয়াদি (২০২৩-২০২৮) এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ইউজিসি।

Read Entire Article