গলাচিপায় ইউএনও’র অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমানের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১২ মার্চ) সকাল ১১টায় গলাচিপা উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে আয়োজিত মানববন্ধনে বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা এবং সর্বস্তরের জনগণ অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা ইউএনও মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণ, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক পক্ষপাতের অভিযোগ তোলেন। তারা দাবি করেন, ইউএনও আওয়ামী লীগপন্থি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখছেন এবং নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের উপস্থিতি বিভিন্ন কর্মসূচিতে নিশ্চিত করছেন। এছাড়া, তার নেতৃত্বে সরকারি তহবিলের অপব্যবহারের অভিযোগও উত্থাপন করেন তারা।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ও বর্তমানে হাঙ্গেরিতে অধ্যয়নরত পিএইচডি শিক্ষার্থী শাহ জুবায়ের আব্দুল্লাহ।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, তারুণ্যের উৎসবে নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠনের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন ইউএনও। এছাড়া, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনসহ তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখছেন তিনি। প্রাক্তন ইউএনও যে ফান্ড রেখে গেছেন, তা তিনি আত্মসাৎ করেছেন বলেও অভিযোগ করেন।
বর্তমান ইউএনও ফ্যাসিবাদীদের দোসর। রাঙ্গাবালী উপজেলায় দায়িত্ব পালনকালে তিনি নৌকার পক্ষে ভোট চেয়েছিলেন। জুলাই আন্দোলনের সময় তিনি সরাসরি ছাত্রদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। এছাড়া তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
এছাড়াও বক্তারা বলেন, তিনি স্বৈরাচারী শক্তির সহযোগী। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নিয়ে এখনো মিটিং করেন। গ্রামীণ উন্নয়ন তহবিলের টাকা বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের দিয়ে বেয়ারা চেকের মাধ্যমে ৬২ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন। এ বিষয় নিয়ে অলরেডি দুদকে মামলা হয়েছে। সেখানেও একটা রাজনৈতিক দলের প্রধান এর মাধ্যমে টাকা দিয়ে থামিয়ে রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে তিনি ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে ওএমএস এর ডিলারশিপ দিয়েছেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইউএনও মিজানুর রহমানের অপসারণের দাবি জানান। দাবি পূরণ না হলে আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা। প্রয়োজনে অফিস ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, তাদের কোনো দাবি-দাওয়া আছে, তা আগে কখনো আমাকে জানানো হয়নি। তবে আমি সবসময় সবার দাবি অনুযায়ী স্বাধ্যমতো সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।
তিনি আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ পুনর্বাসনের অভিযোগের বিষয় বলেন, এ রকম কোনো বিষয় নাই।