ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় পুনর্গঠন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একটি নতুন পরিকল্পনা পেশ করা হয়েছে, যা আরব লিগের অনুমোদনের পর ইউরোপের ৪ শক্তিশালী দেশ—ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি এবং যুক্তরাজ্যের সমর্থন পেয়েছে।
শনিবার (৮ মার্চ) আল জাজিরার প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
এর আগে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) কায়রোতে অনুষ্ঠিত আরব লিগের সম্মেলনে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত প্রস্তাবের বিপরীতে একটি বিকল্প পরিকল্পনা উত্থাপিত হয়।
এই পরিকল্পনাটির মূল লক্ষ্য ছিল ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় জরুরি সহায়তা, বিধ্বস্ত অবকাঠামো পুনর্গঠন এবং দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
বিশ্বের ৪ শক্তিশালী দেশ, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি এবং যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক যৌথ বিবৃতিতে এই নতুন পরিকল্পনাকে সমর্থন জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, গাজার পুনর্গঠনে একটি বাস্তবসম্মত সমাধান দিচ্ছে এই পরিকল্পনা। এটি কার্যকর হলে গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের ভয়াবহ জীবনমানের দ্রুত ও টেকসই উন্নয়ন হবে।
এই পরিকল্পনায় গাজার পুনর্গঠনের জন্য একটি ট্রাস্ট তহবিল গঠন করা হবে এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) অধীনে অঞ্চলটি পরিচালিত হবে।
মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি এই পরিকল্পনাকে ফিলিস্তিনিদের ‘নিজ ভূমিতে থাকার’ অধিকার নিশ্চিত করার একটি উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, এটি গাজার জনগণের জন্য একটি দারুণ সুযোগ, যা তাদের উন্নতির পথ উন্মুক্ত করবে।
এছাড়া জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও এই পরিকল্পনাকে সমর্থন দিয়েছেন। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই ধরনের পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের জন্য দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করবে, যা সব পক্ষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে, গাজা উপত্যাকার পুনর্গঠন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পূর্ববর্তী প্রস্তাবটি ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে। তার পরিকল্পনার মধ্যে ছিল, গাজা থেকে সব ফিলিস্তিনিকে জর্ডান এবং মিসরে পাঠিয়ে দেয়া এবং গাজাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা’ হিসেবে রূপান্তরিত করা।
ট্রাম্পের এই প্রস্তাবকে জাতিসংঘ ‘জাতিগত নিধন’-এর পরিকল্পনা হিসেবে সতর্ক করেছে এবং এটি আরব দেশগুলোর পাশাপাশি বেশ কিছু ইউরোপীয় রাষ্ট্রও প্রত্যাখ্যান করেছে।
এই পরিস্থিতিতে, নতুন পরিকল্পনাটি গাজা উপত্যকায় বাস্তবসম্মত পুনর্গঠন এবং শান্তির পরিবেশ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।