ফ্রান্সের রিভিয়েরায় জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে পর্দা উঠেছে ৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের। কিন্তু উৎসবের শুরুতেই গাজায় ইসরায়েলি হামলা নিয়ে আয়োজকদের নিরবতা ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র বিতর্ক।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বহু চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব এই নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের মতে, গাজার মতো মানবিক বিপর্যয়ের সময়ে একটি বিশ্বমানের চলচ্চিত্র উৎসবের পক্ষ থেকে অবস্থান না নেওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক।
‘শিন্ডলার্স লিস্ট’-খ্যাত অভিনেতা রালফ ফাইনস, কানে পুরস্কারজয়ী নির্মাতা রুবেন অস্টলন্ড, মাইক লি, কোস্টা-গাভরাস, স্প্যানিশ কিংবদন্তি পেদ্রো আলমোদোভার, এবং অভিনেতা রিচার্ড গিয়ার ও সুসান সারান্ডন- এমন ৩৮০ জনেরও বেশি চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি একটি খোলা চিঠিতে এই নীরবতার প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
চিঠিতে তারা লিখেছেন, ‘গাজায় যখন অব্যাহতভাবে প্রাণহানি ঘটছে, তখন শিল্পীদের নীরব থাকা নৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য। এই নীরবতা নিপীড়নের প্রতি সমর্থনের নামান্তর।’
চিঠিটি প্রকাশ করেছে ফরাসি পত্রিকা ‘লিবারেশন’ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাগাজিন ‘ভ্যারাইটি’। এটি বিভিন্ন প্রো-প্যালেস্টিনিয়ান সংগঠনের উদ্যোগে লেখা হয়।
বিশেষভাবে আলোচনায় এসেছে ফাতিমা হাসুনা নামের ২৫ বছর বয়সি এক ফিলিস্তিনি ফটোসাংবাদিকের ঘটনা। তিনি ছিলেন একটি ডকুমেন্টারির প্রধান চরিত্র। যার শিরোনাম ‘Put Your Soul on Your Hand and Walk’। ছবিটি পরিচালনা করেছেন নির্বাসিত ইরানি নির্মাতা সেপিদেহ ফারসি। ছবিটি এই উৎসবেই আগামীকাল বৃহস্পতিবার প্রদর্শিত হবে।
কিন্তু এই ঘোষণার ঠিক পরদিনই ইসরায়েলি বিমান হামলায় ফাতিমা এবং তার পরিবারের আরও ১০ সদস্য নিহত হন। এই ঘটনার পর বিশ্ব চলচ্চিত্র অঙ্গন থেকে নেমে আসে শোক আর ক্ষোভের ঢেউ।
পরিচালক ফারসি বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে কানের মতো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মের উচিত গাজায় চলমান বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে সরব হওয়া। জাতিসংঘের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, অঞ্চলটি মারাত্মক দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে।’
এদিকে উৎসবের প্রভাবশালী মহলে গাজা ইস্যুতে কানের অবস্থান নিয়ে আলোচনা আরও জোরালো হচ্ছে। অনেকেই মনে করছেন, আয়োজকদের এখন সময় এসেছে মানবিকতার পক্ষে কথা বলার।
এখন প্রশ্ন, কান কর্তৃপক্ষ কি এই সমালোচনার মুখে তাদের অবস্থান বদলাবে? সেটাই দেখার পালা।
এলআইএ/জিকেএস