গাজার দখল নিয়ে সেখানে কী করতে চান ট্রাম্প?

2 hours ago 5
ফিলিস্তিনিদের ভূখণ্ড গাজা উপত্যাকার দখল নেওয়ার কথা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তার আগে তিনি উপত্যকাটি খালি করতে চান এবং গাজার পরিবর্তে ফিলিস্তিনিদের বসবাসের জন্য ভালো ও সুন্দর ভূমি দেওয়ার প্রস্তাব দেন ট্রাম্প। একই ধরনের প্রস্তাব ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির পর থেকে দিয়ে আসছেন। তবে প্রশ্ন হলো- গাজা উপত্যাকার দখল নিয়ে সেখানে কী করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।  ট্রাম্প বলেছেন, গাজা একটি অস্থিতিশীল এলাকা। এখানকার বাসিন্দাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। এখানে বারবার যুদ্ধ ঘটেছে, একই জিনিস (যুদ্ধ) আবার ঘটতে চলেছে। এটা এখন একটি ধ্বংসস্তূপ, এখানে থাকা বাসিন্দারা (ফিলিস্তিনিরা) শেষ পর্যন্ত মারা যাবে। ট্রাম্প বলেন, গাজার বাসিন্দাদের অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই বলেই তারা সেখানে ফিরতে চান। আমি আশা করি, আমরা এমন কিছু করতে পারব- সেখানে (গাজায়) তারা ফিরে যেতে চাইবে না। কে ফিরে যেতে চাইবে? সেখানে তারা মৃত্যু এবং ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই কি পেয়েছে? ট্রাম্প বলেন, গাজায় বসবাসকারী ১৮ লাখ ফিলিস্তিনির উচিৎ ‘মানবিক হৃদয়’ ও ‘ধনসম্পদ’ নিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে চলে যাওয়া।  গতকাল মঙ্গলবার নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে গাজা উপত্যকা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন ট্রাম্প। ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হলো গাজাকে জনশূন্য করে দখল করা। এরপর আগামী কয়েক বছরে এখানে মনোরম পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা। তিনি বলেন, আমি একটি দীর্ঘমেয়াদি মালিকানার কথা বলছি। আমি দেখতে পাচ্ছি এর মাধ্যমে সম্ভবত সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে দুর্দান্ত স্থিতিশীলতা আসবে।  তিনি আরও বলেন, এটি হালকাভাবে নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত না। আমি যাদের সাথে কথা বলেছি তারা সবাই এই ধারণাটি পছন্দ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র সেই জমির মালিক হবে, উন্নয়ন করবে এবং হাজার হাজার কর্মসংস্থান তৈরি করবে। ট্রাম্প দাবি করেন, সেখানে বিশ্ববাসীর দখল প্রতিষ্ঠা হবে।  ট্রাম্প বলেন, আমরা গাজা উপত্যকার দখল নেব এবং সেখান থেকে সব বিপজ্জনক অবিস্ফোরিত বোমা ও অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র ধ্বংস করার দায়দায়িত্ব নেব। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এ উপত্যকার বিধ্বস্ত ভবনগুলো সমান করবে, সেখানে অর্থনৈতিক উন্নয়নকাজ চালাবে, সীমাহীন চাকরির ব্যবস্থা করবে এবং বিশ্ববাসীর জন্য বাড়ি তৈরি করবে।  ট্রাম্প প্রস্তাব করেন, গাজাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের সমুদ্রসৈকত’ হিসেবে গড়ে তোলা যেতে পারে, যেখানে বিশ্বের লোকজন থাকতে পারবেন। ট্রাম্পের এ বক্তব্যের সঙ্গে তার জামাতা জ্যারেড কুশনারের কথার মিল আছে। কুশনার বলেছিলেন, ‘সাগরপাড়ের সম্পত্তি’ গাজার মূল্য অনেক বেশি। তাই ধারণা করা হচ্ছে, গাজার দখল নিয়ে উপত্যাকাটিকে সৈকত শহর হিসেবে গড়ে তোলার চিন্তা করছেন ট্রাম্প।  এদিনের সংবাদ সম্মেলনেও গাজার প্রতিবেশী মিসর, জর্ডান ও অন্যান্য আরব দেশকে ফিলিস্তিনিদের গ্রহণ করার আহ্বান জানান ট্রাম্প। এর আগেও ট্রাম্প একই ধরনের প্রস্তাব দেন। গত জানুয়ারির শেষ দিকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের মিসর ও জর্ডানে পাঠানোর কথা বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।  ট্রাম্প বলেছিলেন, আমরা মিসর ও জর্ডানের জন্য অনেক কিছু করি তাই তারাও এই প্রস্তাব গ্রহণ করবে। এর আগেও ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির পর ট্রাম্প গাজা ‘খালি’ করার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছিলেন। তার মতে, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে মিসর বা জর্ডানের মতো ‘নিরাপদ’ স্থানে স্থানান্তর করা উচিত। তবে ফিলিস্তিনি এবং উভয় দেশই তার পরামর্শকে স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।   
Read Entire Article