গাজায় হামাসবিরোধী গ্যাংস্টারকে অস্ত্র দিচ্ছে ইসরায়েল

2 months ago 7

গাজা থেকে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাসকে উৎখাতের যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা ইসরায়েল পোষণ করছে, তার এক অদ্ভুত রূপ সামনে এসেছে। তারা এখন এক দুর্নীতিপরায়ণ, বিতর্কিত গ্যাংস্টারকে অস্ত্র সরবরাহ করছে। এই ব্যক্তির নাম ইয়াসের আবু শাবাব। তিনি ‘পপুলার ফোর্সেস’ নামের একটি মিলিশিয়া গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যার জনসমর্থন প্রায় নেই বললেই চলে। এমনকি নিজের বেদুইন গোত্র ‘তারাবিন’ পর্যন্ত তাকে ত্যাগ করেছে।

আবু শাবাবের গ্রুপটি বর্তমানে দক্ষিণ গাজার রাফা ও খান ইউনুসের কিছু অংশে আধিপত্য বিস্তার করছে। মাত্র কয়েকশ যোদ্ধা নিয়ে গঠিত এই গোষ্ঠীর ক্ষমতা হামাসের তুলনায় নগণ্য হলেও ইসরায়েল সম্প্রতি স্বীকার করেছে, তারা গোষ্ঠীটিকে মারণাস্ত্র—যেমন একে-৪৭—সরবরাহ করছে এবং কিছু এলাকায় তাদের চলাফেরা ও কার্যক্রমের অনুমতিও দিয়েছে।

অতীতের ছায়া ও বিতর্ক

এই গোষ্ঠীর অস্তিত্ব ও কর্মকাণ্ড নিয়ে গুঞ্জন চলছিল বহুদিন ধরে। কিন্তু গত ৫ জুন ইসরায়েলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও বিরোধী এমপি অভিগদোর লিবারম্যান সরাসরি অভিযোগ করেন—প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এমন এক গোত্রকে অস্ত্র দিচ্ছেন, যাদের অতীতে আইএস (ইসলামিক স্টেট)-এর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। নেতানিয়াহু এই নীতির সরাসরি স্বীকৃতি না দিলেও তিনি বলেছেন, ইসরায়েল হামাসকে নানা উপায়ে পরাজিত করার চেষ্টা করছে।

আরও পড়ুন>>

হামাসও এই গোষ্ঠীকে আইএস-সম্পৃক্ত বলে প্রচারণা চালাচ্ছে। যদিও এখন পর্যন্ত আবু শাবাবের কোনো আনুষ্ঠানিক ‘জিহাদি’ সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। বরং তিনি নিজেকে একজন ‘ফিলিস্তিনি জাতীয়তাবাদী’ হিসেবে পরিচয় দেন এবং অন্য মুসলিম গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইসরায়েলের সহায়তা গ্রহণে দ্বিধা করেন না।

অপরাধমূলক অতীত

আবু শাবাব এবং তার গ্রুপের বিরুদ্ধে মানবিক সহায়তা ছিনতাই ও মানবিক সহায়তা কর্মীদের হত্যার অভিযোগ আছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত বছর এই গোষ্ঠী বহু ত্রাণ ট্রাক ছিনতাই করে এবং কয়েকজন চালককে হত্যা করে। যদিও আবু শাবাব দাবি করেন, তিনি দরিদ্র পরিবারগুলোর সাহায্যের জন্য এসব করেছেন, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এসব সহায়তা তারা নিজেদের কাছে রেখে দিয়েছে বা চড়া দামে বিক্রি করেছে।

ইসরায়েলের পুরোনো ভুলের পুনরাবৃত্তি?

১৯৮০-এর দশকে ইসরায়েল ফাতাহর মোকাবিলায় গাজায় ইসলামপন্থিদের সমর্থন দিয়েছিল। সেই ইসলামী সমাজ পরে হামাসে রূপ নেয় এবং আত্মঘাতী হামলা শুরু করে। সেই পুরোনো ভুলের ছায়া আজ আবার দেখা যাচ্ছে। নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে আবু শাবাব ও তার গোষ্ঠী ভবিষ্যতে জঙ্গিগোষ্ঠীতে পরিণত হতে পারে।

কেএএ/

Read Entire Article