পাঁচ বছর কারাভোগের জন্য কারাগারে উপস্থিত হয়েছেন ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজি। লিবিয়া থেকে নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) প্যারিসের লা সান্তে কারাগারে প্রবেশ করেছেন সারকোজি। ফ্রান্সের ইতিহাসে এটি এক বিরল ঘটনা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথমবারের মতো কোনো সাবেক ফরাসি প্রেসিডেন্টকে জেলে পাঠানো হলো।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য মতে, ২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন সারকোজি। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০০৭ সালের নির্বাচনী প্রচারে তৎকালীন লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির কাছ থেকে কয়েক মিলিয়ন ইউরো অবৈধভাবে নেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘ কয়েক বছরের তদন্ত ও আইনি লড়াইয়ের পর ফরাসি আদালত গত মাসে তাকে দোষী করে রায় দিয়েছে।
তবে আদালতের রায়ে বলেছে, সারকোজিকে ব্যক্তিগতভাবে অর্থ গ্রহণ বা ব্যবহারের দায়ে দোষী করা হয়নি। তবে তিনি তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের সঙ্গে মিলে তহবিল সংগ্রহের ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন।
মঙ্গলবার (২১ অক্টবর) সকালে কারাগারে যাওয়ার জন্য স্ত্রী কার্লা ব্রুনির বাড়ি থেকে বের হন সারকোজি। এ সময় বাইরে হাজারো সমর্থক তাকে ঘিরে, নিকোলা, নিকোলা বলে স্লোগান দেন এবং ফরাসি জাতীয় সংগীত লা মার্সেইয়েজ গেয়ে সমর্থন জানায়।
কারাগারে যাওয়ার পথে গাড়িতে বসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স -এ এক আবেগঘন বার্তা দেন সারকোজি। তিনি লিখেছেন, আজ সকালে কারাগারে যাচ্ছেন কোনো সাবেক প্রেসিডেন্ট নন—একজন নির্দোষ মানুষ। এই মামলার পেছনে প্রতিশোধ ও ঘৃণার রাজনীতি কাজ করছে।
সারকোজি বরাবরই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন এবং এটিকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন।
তার ভাই গিয়োম সারকোজি ফরাসি টেলিভিশন চ্যানেল বিএফএম টিভিকে বলেন, আমি নিকোলার প্রতি গর্বিত। তিনি মাথা উঁচু করে জেলে যাচ্ছেন। আমরা সবাই তার নির্দোষতায় নিশ্চিত।
এই রায়ের মধ্য দিয়ে ফ্রান্সের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নাটকীয় অধ্যায় যুক্ত হলো—একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট, যিনি একসময় ইউরোপীয় রাজনীতির শীর্ষে ছিলেন, এখন তিনি কারাগারের কয়েদি।
কেএম