‘গায়েবি গ্যারান্টর’ বানিয়ে ব্যবসায়ীকে ফাঁসানোর অভিযোগ

20 hours ago 3

 

  • • লেটার অব গ্যারান্টরের বুকলেটের পাতার সিরিয়ালে অসঙ্গতি
  • • সইসহ তথ্যে গড়মিল
  • • ব্যাংকের সাত কর্মকর্তাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ
  • • লিগ্যাল নোটিশের জবাবে ব্যাংকের দায় স্বীকার

সিলেটে ইস্টার্ন ব্যাংক চৌহাট্টা শাখা থেকে ৩৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে নির্ধারিত সময়ের আগেই পরিশোধ করেছিলেন সুনামগঞ্জের ব্যবসায়ী এমদাদুল হক। এজন্য ‘ভালো গ্রাহক’ হিসেবে ব্যাংক তাকে স্বীকৃতিও দেয়। কিন্তু এরপরে যা ঘটেছে তা কখনো কল্পনাও করতে পারেননি এমদাদুল। ওই ব্যাংকের অন্য এক গ্রাহকের এক কোটি ২০ লাখ টাকার খেলাপি ঋণে ‘গায়েবি গ্যারান্টর’ সাজিয়ে ফাঁসানো হয়েছে তাকে। ব্যাংকের করা একটি অর্থঋণ মোকদ্দমার বিবাদীও হতে হয়েছে এই ব্যবসায়ীকে।

এমদাদুল হক সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার নতুনপাড়া গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে। বর্তমানে তিনি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাছননগর এলাকায় বসবাস করছেন। মেসার্স এমদাদ ট্রেডিং নামে তার একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।

এ ঘটনায় গত ১০ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবর ব্যাংকের সাত কর্মকর্তাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন এমদাদুল। একইসঙ্গে বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) সিলেটের অর্থঋণ আদালতে ইস্টার্ন ব্যাংকের করা মোকদ্দমার জবাব দাখিল করেছেন তিনি।

দুদকে দেওয়া অভিযোগে অভিযুক্তরা হলেন ইস্টার্ন ব্যাংকের চৌহাট্টা শাখার রিটেইল ও এসএমই ব্যাংকিংয়ের সাবেক অ্যাসোসিয়েট রিলেশনশিপ ম্যানেজার মোহাম্মদ ফয়জুল ইসলাম, ব্যাংকের চৌহাট্টা শাখার এসএভিপি ও শাখা ব্যবস্থাপক দিপংকর দাশ পলাশ, লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্সের সিনিয়র অফিসার বিপ্রেশ দাস, সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার দেউলগ্রামের আব্দুল মালিকের ছেলে ও পালস কমিউনিকেশনের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন ও তার স্ত্রী মোছাম্মৎ জাহানার বেগম।

অভিযুক্ত আরও পাঁচজন হলেন সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার শ্রীধরা এলাকার মুহিবুর রহমানের ছেলে ও ইভা অ্যান্ড ইকরা মটরসের স্বত্বাধিকারী দেলওয়ার হোসেন, ইস্টার্ন ব্যাংক চৌহাট্টা শাখার ব্রাঞ্চ সেলস ও সার্ভিস ম্যানেজার আব্দুল কুদ্দুস ভূঁইয়া, ব্যাংকের ক্রেডিট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের এসপিও অ্যান্ড ম্যানেজার গোলাম মুজতবা খান লুসেন্ট, সাবেক ব্রাঞ্চ ও এরিয়া হেড (সিলেট ও নারায়ণগঞ্জ) শরফুদ্দিন মোজাফ্ফর আলী ও ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সিআরএম আব্দুল মতিন।

তার আগে গত ৭ এপ্রিল জালিয়াতির ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ ও এমদাদুল হকের ঋণ সংক্রান্ত সব নথির সেফ কাস্টডি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিলেট অফিসের নির্বাহী পরিচালক বরাবর লিখিত আবেদন করেন এমদাদুল।

খেলাপি ঋণে যেভাবে ফাঁসানো হলো এমদাদুলকে

অর্থঋণ মোকদ্দমার নথি, দুদকে দেওয়া অভিযোগ ও আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জের বাসিন্দা এমদাদুল হক ২০২২ সালে অনলাইনে ইস্টার্ন ব্যাংকের ফেসবুক পেজে সহজ শর্ত ও স্বল্প সুদে ঋণের বিজ্ঞাপন দেখে নিজ থেকে আগ্রহী হয়ে যোগাযোগ করেন ইস্টার্ন ব্যাংক চৌহাট্টা শাখায়। সুনামগঞ্জের ব্যাংকের কোনো শাখা না থাকায় সিলেটে আসেন তিনি। সব প্রক্রিয়া শেষে ওই বছরের ২৭ নভেম্বর এমদাদুলের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স এমদাদ ট্রেডিং’ এর নামে ‘ইবিএল বিজনেস এক্সেলারেটর’ স্কিমের অধীনে ৩০ কিস্তিতে পরিশোধ সাপেক্ষে ৩৫ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়।

ঋণ দেওয়ার সময় তার কাছ থেকে ঋণসংক্রান্ত বিভিন্ন কাগজপত্রে সই নেওয়া ছাড়াও বাধ্যতামূলকভাবে মেসার্স এমদাদ ট্রেডিং নামীয় সিল ও সই এবং তারিখ ও অলিখিত ২০টি প্যাডের পাতা নেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এছাড়া তার নামে সই করা অন্যান্য কলাম অপূর্ণ চারটি ব্যাংক চেক নেয় ব্যাংক। এসময় সব কাগজাদির একটি অনুলিপি চাইলে তাকে দেওয়া হয়নি।

দুদকে করা অভিযোগ ও মোকদ্দমার জবাবে উল্লেখ করা হয়, এমদাদুল হক ঋণ নেওয়ার পর থেকে নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করতে থাকেন। ঋণের মেয়াদপূর্তির আট মাস আগেই গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর এককালীন ১০ লাখ ৫৩ হাজার ৮৮১ টাকা পরিশোধ করে ঋণমুক্ত হন তিনি। ঋণ ক্লোজিংয়ের (সমাপ্তির) দিনে পূর্বে জমা রাখা চেক বই, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের প্যাডসহ সব কাগজপত্র ফেরত নিতে চাইলে এগুলো ব্যাংকিং আইনে ফেরত দেওয়া যায় না জানিয়ে একটি লোন ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

আরও উল্লেখ করেন, গত বছরের ২১ নভেম্বর ইস্টার্ন ব্যাংক চৌহাট্টা শাখা থেকে ম্যানেজার পরিচয়ে তাকে বলা হয়, সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন নামের এক ব্যক্তির এক কোটি ২০ লাখ টাকার একটি ঋণের গ্যারান্টর তিনি (এমদাদুল হক)। এই গ্রাহক ঋণ খেলাপি হয়েছেন। এজন্য গ্যারান্টর হিসেবে তাকেই ঋণের টাকা পরিশোধ করতে হবে। শুধু তাই নয়, খেলাপি ঋণ পরিশোধ না করলে কোন আইনে কী শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে—এসব বলে তাকে ভয়ভীতি দেখানো হয়।

ব্যাংকের আচমকা এমন কাণ্ডে রীতিমতো অবাক হন এমদাদুল। এ ঘটনায় চলতি বছরের ৭ এপ্রিল ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ ও ঋণ সংক্রান্ত সব নথির সেফ কাস্টডি নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সিলেট অফিসের নির্বাহী পরিচালক বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন।

পরে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, এর আগে গত বছরের ২৬ নভেম্বর ইস্টার্ন ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার বিপ্রেশ দাস বাদী হয়ে অর্থঋণ আদালতে তাকে ৩ নম্বর বিবাদী করে একটি মামলা করেছেন।

আদালতে দাখিল করা নথিতেই ধরা পড়ে ভয়ঙ্কর জালিয়াতি

ইস্টার্ন ব্যাংকের করা অর্থঋণ মোকদ্দমা নথিতে দেখা যায়, ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর ব্যাংকের টার্ম লোনের উৎকর্ষের আওতায় এক কোটি ২০ লাখ টাকা ঋণ নিতে আবেদন করেন সিলেটের বিয়ানীবাজারের ‘পালস কমিউনিকেশন’ নামের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন। মামলার নথিতে ঋণের প্রথম গ্যারান্টর মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন নিজে, দ্বিতীয় গ্যারান্টর হন ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী মোছাম্মৎ জাহানারা খানম। তৃতীয় গ্যারান্টর হিসেবে এমদাদুল হকের নামে একটি লেটার অব গ্যারান্টর সংযুক্ত রয়েছে।

নথিতে আরও দেখা গেছে, ফরহাদ হোসেনের ঋণের দ্বিতীয় গ্যারান্টর জাহানার খানমের সই ও তৃতীয় গ্যারান্টর এমদাদুল হকের সই সত্যয়নকারী ব্যাংক কর্মকর্তার সই ভিন্ন। তাছাড়া বুকলেটে হাতে লেখা ফরহাদ হোসেন ও জাহানারা খানমের নাম ঠিকানা ও ১০০ টাকা করে তিনটি স্ট্যাম্প বসানোর নমুনার সঙ্গে এমদাদুল ইসলামের লেখা তথ্যে ভিন্নতা রয়েছে।

দুদকে করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সবচেয়ে বড় জালিয়াতি ধরা পড়ে লেটার অব গ্যারান্টরের বুকলেটের পাতার সিরিয়ালে। বুকলেটে ফরহাদ হোসেনের পাতার সিরিয়াল ৩৯ ও স্ত্রী জাহানারা খানমের পাতার সিরিয়াল ৪১। সেখানে এমদাদুলের কথিত লেটার অব গ্যারান্টরের সিরিয়াল ৩৯। তাও আবার জাহানারা খানমের পাতার উল্টোপাশে পিন দিয়ে আটকানো।

এমদাদুলের লেটার অব গ্যারান্টরের সত্যয়নকারী ব্যাংক কর্মকর্তার সইয়ের সঙ্গে ফরহাদ হোসেন ও তার স্ত্রীর জাহানারা খানমের সত্যয়নকারী কর্মকর্তার সইয়ের মিল নেই। এছাড়া এমদাদুলের লেটার অব গ্যারান্টরে তার সই সত্যয়ন করেননি ফরহাদ হোসেন। যেমনটা তার স্ত্রীর লেটার অব গ্যারান্টরে করেছিলেন।

লেটার অব গ্যারান্টিতে ফরহাদ হোসেন ও তার স্ত্রীর ছবি নেই। কিন্তু এমদাদুলের লেটার অব গ্যারান্টিতে তার একটি ছবি যুক্ত রয়েছে। যেটি তিনি আগে ব্যাংকে জমা দিয়ে ঋণ নিয়েছিলেন।

ভুক্তভোগী এমদাদুল হক বলেন, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ টার্গেট করেই তাকে সিলেটের এক ব্যবসায়ীর এক কোটি ২০ লাখ টাকার খেলাপি ঋণে ফাঁসিয়েছে। এজন্য তার ব্যক্তিগত ঋণের ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দিলেও ঋণগ্রহণের সময় জমা দেওয়া চেক বইয়ের পাতাসহ কোনো কাগজপত্র অসৎ উদ্দেশ্যের জন্য ফেরত দেওয়া হয়নি।

লিগ্যাল নোটিশে দায় স্বীকার করেছে ব্যাংক!

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী এমদাদুল হক তার আইনজীবীর মাধ্যমে ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। গত ৫ মে নোটিশের জবাবে ফরহাদ হোসেনের ঋণের গ্যারান্টর পরিবর্তনের বিষয়টি স্বীকার করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তবে এ বিষয়ে এমদাদুল হক সবকিছু জানেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু গ্যারান্টর পরিবর্তন করার বিষয়টি অবগত নয় বলে জানিয়েছেন এমদাদুল হক।

লিগ্যাল নোটিশের জবাবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর ফরহাদ হোাসেনের স্ত্রী জাহানারা খানম ও কথা মিডিয়ার স্বত্বাধিকারী মো. দেলওয়ার হোসেন লেটার অব গ্যারান্টি সম্পাদন করে ফরহাদ হোসেনের ঋণ প্রাপ্তিতে সহযোগিতা করেন। কিন্তু দেলওয়ার হোসেনের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক কারণে গ্যারান্টর হতে মুক্ত হওয়ার আবশ্যকতা দেখা দেয়। পরে ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর ফরহাদ হোসেনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দেলওয়ার হোসেনকে অব্যাহতি দিয়ে এমদাদুল হককে গ্যারান্টর করা হয়। এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা ও ব্যাংকিং নীতিমালা অনুসরণ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু ২০২২ সালে গ্যারান্টর পরিবর্তন হলেও এমদাদুল হকের লেটার গ্যারান্টিতে ২৭-১২-২০১৮ লেখা রয়েছে। এটিকে ব্যাংক কর্মকর্তারা সরল বিশ্বাসে লিখেছেন বলে লিগ্যাল নোটিশের জবাবে বলা হয়।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী এমদাদুল হক বলেন, ‘ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েই গায়েবি গ্যারান্টর বানিয়ে আমাকে খেলাপি ঋণে ফাঁসিয়েছে। এটা সর্ম্পূর্ণ পরিকিল্পিত একটি ঘটনা। তাছাড়া আদালতে অর্থঋণ মোকাদ্দমা দাখিল করা নথি ও বাংলাদেশ ব্যাংকে দাখিল করা নথিতেও ব্যাপক গড়মিল রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি আমার ব্যক্তিগত ঋণ নিতে দু-একবার ব্যাংকে গিয়েছি। এখন তারা বলছেন, আমি গ্যারান্টর হওয়ার জন্য ব্যাংকে গেছি। লেটার অব গ্যারান্টর সম্পূর্ণ আমার অগোচরে জালিয়াতির মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছে।’

এমদাদুল হক আরও বলেন, এ ঘটনায় দুদকে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। দুদক বিষয়টি আমলে নিয়েছে।

যা বলছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ

এ বিষয়ে ইস্টার্ন ব্যাংকের চৌহাট্টা শাখার রিটেইল ও এসএমই ব্যাংকিংয়ের সাবেক অ্যাসোসিয়েট রিলেশনশিপ ম্যানেজার (বর্তমানে উপশহর শাখায় কর্মরত) মোহাম্মদ ফয়জুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত গিয়ে আমরা কথা বলেছি। একই জিনিস নিয়ে গত এক বছর ধরে আর কত কথা বলবো? উনি এখন যে পর্যায়ে গেছেন, এখন আর আলোচনা করে লাভ নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকে উনার সামনেই স্টেটমেন্ট দিছি। সবকিছুই তো দিয়ে দিছি। এখন আর কী বলার আছে? উনি যে ফ্রড কথা বলছেন, সবগুলো আমাদের কাছে ডকুমেন্টারি আছে। উনার হোয়াটসঅ্যাপে কী আছে, সবকিছু প্রমাণ আছে। সিসিটিভি ফুটেজ আছে। এতকিছু বলার পরেও তিনি আইনি পর্যায়ে গেছেন।’

লেটার অব গ্যারান্টরে সইসহ বিভিন্ন নথিতে জাল-জালিয়াতি বিষয়ে ফয়জুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা যখন কিছু সাবমিট করি, তখন আমাদের হাতে আর কিছু থাকে না। মামলার ডিপার্টমেন্ট সম্পূর্ন আলাদা। মামলা আমি করিনি। তারাই সবকিছু করেছেন। এরপরও কিছু জানতে চাইলে ব্যাংকে আসেন।’

জানতে চাইলে ব্যাংকের চৌহাট্টা শাখার এসএভিপি ও শাখা ব্যবস্থাপক দিপংকর দাশ পলাশ ফোনে জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের ব্যাংকের অনেক মামলা চলে। এভাবে হুট করে বললে রি কল(মনে করা) করাটা সমস্যা। তাছাড়া যার নাম বলছেন, এই নামে আরও ৮-১০ ব্যক্তি আছেন। আমি কার কথা বলবো আসলে বুঝতে পারছি না।’

আইনজীবীরা যা বলছেন

সিলেট জজ কোর্টের আইনজীবী আশফাকুজ্জামান চৌধুরী বলেন, এমন ঘটনা ব্যাংকিং সেক্টরে জবাবদিহিতার ঘাটতির জানান দেয়। জাল-জালিয়াতি করে গ্যারান্টর বানানোর এমন কাণ্ড ব্যাংকের যে কোনো গ্রাহকের জন্যই দুশ্চিন্তার বটে। নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমন ঘটনা রোধে আরও তৎপর হওয়া উচিত।

সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ভুক্তভোগী ব্যক্তি যেহেতু নিজে বাদী হয়ে দুদকে অভিযোগ দিয়েছেন, সেহেতু দুদকের উচিত এই মামলার তথ্য উদঘাটন করা এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করা। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তা নাহলে ব্যাংকের মতো স্পর্শকাতর অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানে মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে যাবে।

আহমেদ জামিল/এসআর/জিকেএস

Read Entire Article