মৃত্যু সংবাদ শোনা মাত্রই নিজের কাজ ফেলে কোদাল, শাবল ও খুন্তি নিয়ে ছুটে যান কবর খুঁড়তে। পরম যত্ন আর ভালোবাসা দিয়ে মানুষের শেষ যাত্রার সঙ্গী হন যারা সেসব গোর খোদক ও লাশের গোসল করানো ব্যক্তিদের ঈদের উপহার দিয়েছে বাংলার চোখ নামে সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী একটি সংগঠন।
শুক্রবার রংপুর শিল্পকলা একাডেমিতে প্রায় দেড়শ জন কবর খননকারী ও লাশের গোসল করানো ব্যক্তিকে ঈদ উপহার দেওয়া হয়। এছাড়াও পিছিয়ে পড়া তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী, নিরাপত্তা কর্মী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীদেরকে এ উপহার দেওয়া হয়েছে।
তানবীর ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে এ আয়োজন করে সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাংলার চোখ। এ সময় তাদেরকে নিয়ে ইফতার করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন সামাজিক সংগঠন, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিনা পয়সায় ভালো কাজ করেও সমাজে স্বীকৃতি না পাওয়া এসব মানুষকে সম্মান জানায় তাদের সংগঠন। তাদের সাথে ঈদের খুশি ভাগাভাগি করতে এমন আয়োজন করেছেন তারা। এসময় প্রত্যেকজনকে ঈদের খাদ্য সামগ্রী,নতুন পোশাক ও নগদ অর্থ উপহার দেয়া হয়েছে।
নগরীর কেডিসি রোড এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ এলাহী। তিনি গত সাত বছর থেকে কেউ মারা গেলে তার জন্য কবর খুঁড়ছেন। এবছর ঈদের আগে এমন উপহার পেয়ে আপ্লুত তিনি। মোহাম্মদ এলাহী বলেন, আমরা বিনা পয়সায় কেউ মারা গেলে তার জন্য কবর খুড়ি। একজন মুসলমান ভাইয়ের শেষ বিদায়ের দিন তার দাফন কাজ সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে সাহায্য করি। কিন্তু সেভাবে আমাদের খোঁজ কেউ রাখে না। এবার বাংলার চোখ তাদের সম্মান জানানো তিনি অত্যন্ত খুশি বলে জানান।
মৃত ব্যক্তিকে গোসল করানো নজিরেরহাট এলাকার সোহরাব হোসেন বলেন, খুব খুশি হয়েছি। উপহার যাই হোক কিন্তু আমাদের ডেকে এখানে নিয়ে আসায় আমরা সন্তুষ্ট।
বাংলার চোখের চেয়ারম্যান তানবীর হোসেন বলেন, মৃতদেহের গোসল ও দাফন কার্যে যারা জড়িত থাকেন তারা মূল্যায়ন পান না। এদেশের বিভিন্ন পেশার মানুষ যদি সংবর্ধনা পান তাহলে একজন মানুষের অন্তিম যাত্রায় সহায়তাকারী মানুষরা কেন সংবর্ধিত হবেন না। এজন্য তাদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে এমন আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।