গ্যাস ভেবে এড়িয়ে যাচ্ছেন? হতে পারে গলব্লাডার ক্যানসার
পেটে মাঝে মাঝেই ব্যথা হয়? গ্যাস বা অম্বল ভেবে এড়িয়ে যাচ্ছেন? একটু সাবধান হোন। সব ব্যথাই কিন্তু সাধারণ গ্যাসের কারণে হয় না। কখনো কখনো এমন অস্বস্তির পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে মারাত্মক একটি অসুখ– গলব্লাডার বা পিত্তথলির ক্যানসার। এটা এমন এক ধরনের ক্যানসার, যেটা শুরুতে খুব একটা লক্ষণ দেখায় না আর তাই সময়মতো ধরা পড়ে না।
পিত্তথলি বা গলব্লাডারের ক্যানসার খুব সাধারণ নয়, কিন্তু একবার হলে তা অনেক ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। এটি যকৃতের নিচে থাকা ছোট্ট অঙ্গ পিত্তথলিতে শুরু হয়, যেখানে হজমের জন্য দরকারি রস জমা থাকে।
এই ক্যানসারটা সাধারণত শুরুতে খুব একটা ধরা পড়ে না, কারণ এর উপসর্গগুলো অনেকটাই সাধারণ এবং অন্য সমস্যার মতো মনে হয়। ফলে মানুষ অনেক সময়ই গুরুত্ব না দিয়ে দেরিতে চিকিৎসা নেন, আর তখন পরিস্থিতি জটিল হয়ে যায়।
আরও পড়ুন : ঘুমের মধ্যে ঘামছেন, ক্যানসারের লক্ষণ নয়তো
তবে কয়েকটি লক্ষণ আগে থেকেই চিনে নিলে সময়মতো চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব। নিচে এমন ৫টি লক্ষণ বলা হলো, যেগুলো অনেকেই এড়িয়ে যান:
১. ডান দিকের পেটের ওপরের অংশে হালকা ব্যথা বা অস্বস্তি
ডান পাঁজরের নিচে যদি মাঝে মাঝে ভারী ভাব, চাপ বা টান ধরার মতো কিছু অনুভব হয়, তাহলে সেটা অবহেলা করা ঠিক নয়। অনেকে ভাবেন এটা গ্যাস, অম্বল বা পাথরের কারণে, কিন্তু সেটা না-ও হতে পারে। যদি এই ব্যথা বারবার ফিরে আসে, চিকিৎসকের কাছে যাওয়া ভালো।
২. খাওয়ার পর বমিভাব বা অস্বস্তি
অল্প খাওয়ার পরও যদি গা গুলিয়ে ওঠে বা অস্বস্তি লাগে, তাহলে সেটা হজমের সমস্যা নয় ক্যানসারের ইঙ্গিতও হতে পারে। যদি এই উপসর্গ কয়েক সপ্তাহ ধরে থাকে এবং এর পেছনে অন্য কোনো পরিষ্কার কারণ না থাকে, তাহলে দেরি না করে ডাক্তার দেখানো উচিত।
৩. হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া বা খাওয়ার রুচি কমে যাওয়া
অনেক সময় অজান্তেই খাওয়ার ইচ্ছা কমে যায় বা ওজন কমতে থাকে। এটা অনেক রোগের লক্ষণ হতে পারে, কিন্তু পিত্তথলির ক্যানসারেও এমন হয়। শরীর যদি ঠিকভাবে খাবার শোষণ করতে না পারে, তাহলে শক্তির অভাব দেখা দেয়। তাই এমন কিছু হলে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে।
৪. চোখ বা ত্বকে হলদে ভাব (জন্ডিসের লক্ষণ)
যদি চোখ বা ত্বকে হালকা হলদে রং দেখা যায়, চুলকানি হয়, প্রস্রাব গাঢ় রঙের হয় আর মল হয় ফ্যাকাসে, তাহলে তা জন্ডিসের লক্ষণ হতে পারে। গলব্লাডার ক্যানসারে এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যদি আপনার ত্বক গাঢ় রঙের হয়, তাহলে খেয়াল করাটা আরও দরকারি।
৫. সবসময় ক্লান্ত লাগা বা দুর্বলতা
যদি ঘুমিয়েও ক্লান্তি না কাটে, সবসময় অবসন্ন লাগে, তাহলে সেটি শুধু কাজের চাপ নয় – এর পেছনে বড় কোনো কারণ থাকতে পারে। পিত্তথলির ক্যানসারে এমন ধরণের ক্লান্তি অনেক সময় দেখা দেয়। সঙ্গে যদি অন্য উপসর্গও থাকে, তাহলে অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে।
আরও পড়ুন : হাত-পায়ে ঝিঁঝি ধরা কি বড় কোনো সমস্যার ইঙ্গিত
যে কোনো অস্পষ্ট উপসর্গ যদি অনেকদিন ধরে চলতে থাকে, তাহলে সেটা অবহেলা না করে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। ক্যানসার যত আগে ধরা পড়ে, চিকিৎসা ততটাই সহজ হয়।
তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া