এক সপ্তাহ পর পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকার নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে। সরকারের জারি করা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগে শেষ সময়ে দেশের অন্যতম বৃহৎ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাটে জমে উঠেছে ইলিশের বাজার। তবে সরবরাহ কম আর চাহিদা বেশি থাকায় প্রতি কেজিতে ইলিশের দাম বেড়েছে গড়ে ১০০-২০০ টাকা।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বড়স্টেশন মাছঘাটে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ক্রেতারা ইলিশ কিনতে ভিড় জমান। তবে দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে চাহিদা অনুযায়ী ইলিশ কিনতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়েন অনেকে। অনেক ক্রেতা ঘুরে ফিরে শেষ পর্যন্ত খালি হাতে বাড়ি ফিরেছেন।
চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাট দেশের অন্যতম বৃহৎ ইলিশের আড়ত। মৌসুমজুড়ে এখানকার ইলিশ সারাদেশে সরবরাহ করা হয়। তবে নদীতে ইলিশ ধরা বন্ধ হয়ে গেলে বাজারে সরবরাহও বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে আগামী তিন সপ্তাহ ইলিশের বাজার একেবারেই ফাঁকা থাকবে।
বর্তমানে বাজারে এককেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকায়। আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, নদীতে মাছের সরবরাহ স্বাভাবিক না থাকায় দাম বেড়েছে। তবে নিষেধাজ্ঞার আগে যদি সরবরাহ বাড়ে, তাহলে শেষ সময়ে কিছুটা হলেও দাম কমতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তারা।
ইলিশ কেনার জন্য ঘাটে আসা ক্রেতারা বলছেন, বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় দাম অনেক বেশি। তবুও নিষেধাজ্ঞার আগে পরিবারের জন্য ইলিশ কিনতে ভিড় করছেন তারা।
ইলিশ কিনতে আসা ইকবাল বলেন, বড়স্টেশন মাছঘাটে এসেছি ইলিশ কিনতে কিন্তু দুঃখের বিষয়, দাম বেশি বলে কিনতে পারছি না। ছুটির দিন থাকায় ক্রেতার চাপ বেড়েছে, তাই দামও বেশি চাচ্ছে। মনে করেছি শেষ সময়ে হয়তো দাম কমবে কিন্তু উল্টো বেড়েছে। মনে হয় না আর ইলিশের দাম কমবে।
ইলিশ ব্যবসায়ী সাইফুল ও মনছুর বলেন, ইলিশের এখন পুরো শেষ মৌসুম চলছে। এ সময়ে সরবরাহ একেবারে কম। কিছু ইলিশ এখন আসতেছে, তবে আকারে ছোট। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী মাছঘাটে ইলিশ কম, যার কারণে দাম বেশি। বেশিরভাগ ক্রেতারা দাম শুনেই চলে যায়। এতে আমাদের বিক্রি কম হচ্ছে। আমরা কমে বিক্রি করতে পারছি না, কারণ আমাদের ডাকে বেশি দাম দিয়ে ইলিশ কিরতে হয়। এ সপ্তাহে আর দাম কমার সম্ভাবনা দেখছি না। যদি প্রচুর সরবরাহ বাড়ে, তাহলে শুধু দাম কমবে।
জেলা মৎস্য বণিক সমিতি সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত সরকার বলেন, ৪ অক্টোবর থেকে ২২ দিন চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাটে ইলিশ বিক্রি বন্ধ থাকবে। নিষেধাজ্ঞা সময়ে কোনো ইলিশ কেনাবেচা হয় না। শেষ সময়ে ক্রেতাদের চাপ বাড়লে ইলিশের সরবরাহ কম।
শরীফুল ইসলাম/আরএইচ/এএসএম