চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভয়াবহ আকারে দেখা দিয়েছে সার সংকট। ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও অনেকে খালি হাতে ফিরছেন। কিছু ডিলারের কাছে সার পাওয়া গেলেও গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। সংকট নিরসনে তৎপর না হলে চলতি সবজি উৎপাদন নিয়ে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হবে বলে আশঙ্কা চাষিদের।
সরজমিনে শিবগঞ্জ উপজেলা শ্যামপুর ইউনিয়নের সারের ডিলারের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, ইউরিয়া, পটাশ, ডিএপি সার পাওয়ার আশায় ভোরে ডিলারের দোকানে ছুটে আসেন কৃষকরা। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর জায়গা আগেই চিহ্নিত করতে কেউ রেখে যান ইট, কেউবা বাঁশ কিংবা অন্য সরঞ্জাম। অনেক সময় নগদ অতিরিক্ত অর্থ দিয়েও মিলছে না সার। এতে হতাশায় দিন কাটছে কৃষকদের।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুস সালাম। সম্প্রতি তিনি বাগানের আম বিক্রির কার্যক্রম শেষ করেছেন। এখন গাছের পরিচর্যার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত সার। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী সার পাচ্ছেন না তিনি। জামাল উদ্দিন জানান, গত ১০ দিন ধরে সারের জন্য বিভিন্ন ডিলারের দোকানে ঘুরেছেন কিন্তু সার পাননি। তাই অতিরিক্ত দাম দিয়ে সার কিনে আম বাগানে দিচ্ছেন। এমনকি ডিলারের কাছে সার কিনতে গেলে বেঁধে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন শর্ত।
উপজেলার হাজার বিঘিগ্রামের বাসিন্দা রনি আল-মানুন বলেন, আমি শীতকালীন সবজি চাষ করি। কিন্তু এবার সার পাচ্ছি না। ভোরে সারের দোকানের সামনে লাইনে দাঁড়ানোর জন্য ইট দিয়ে এসেছিলাম। পরে গতকাল গিয়ে এক বস্তার সার পেয়েছি। কিন্তু আমার প্রয়োজন ৫ বস্তা। আমি সবজির ফলন নিয়ে শঙ্কায় আছি।
সদর উপজেলার বাসিন্দা আতিকুর রহমান স্বজন বলেন, সার পাওয়া যাচ্ছে না। পাওয়া গেলেও দাম বস্তায় প্রায় ৩০০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। আমি স্ট্রবেরি চাষ করি। কিন্তু পর্যন্ত সার পাচ্ছি না। তাই স্ট্রবেরি চাষের ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
সার সংকটের বিষয়টি অস্বীকার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. ইয়াছিন আলী জানান, অতিরিক্ত দামে সার বিক্রির অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সার সংকটের কোনো সম্ভাবনা নেই।
সোহান মাহমুদ/এমএন/জেআইএম