বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছে সংগঠনটি। বুধবার (২৭ নভেম্বর) চিন্ময় ব্রহ্মচারীর ফের জামিন শুনানির রায় দেখে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) রাতে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জোট নেতারা এসব কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলাম শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট মোড়ে অবস্থিত স্বাধীনতা স্তম্ভে জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে এ মামলা হয়।
সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জোটের উপদেষ্টা অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, জোটের সহযোগী মুখপাত্র কুশল বরণ চক্রবর্তী, জোটের প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট সুমন রায়, প্রদীপ দে, প্রসেনজিৎ হালদারসহ অন্যরা।
এ সময় সনাতনী জোটের এক নেতা বলেন, আগামীকাল (২৭ নভেম্বর) বুধবার চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর আবার জামিন শুনানি রয়েছে। সরকার ভেবেছে তাকে গ্রেপ্তার করলে আন্দোলন থেমে যাবে। কিন্তু চিন্ময় দাস শুধু একজন নয়, প্রতিটি সনাতনীর ঘরে ঘরে চিন্ময় প্রভু রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তার করে আন্দোলন থামানো যাবে না। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এটুকু বলতে পারি যে, যদি কাল (বুধবার) চিন্ময় প্রভুর জামিন না হয়, তাহলে এই আন্দোলন বিচ্ছিন্নভাবে না হয়ে সম্মিলিতভাবে অহিংস আন্দোলনে রূপ নেবে। প্রয়োজনে তাকে যে কারাগারে রাখা হবে, আমরা সেখানে লংমার্চ করে সেই কারাগারে স্বেচ্ছায় কারাবরণ করব।
জোটের আরেক নেতা বলেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট আইনের প্রতি পুরোপুরি শ্রদ্ধাশীল। বুধবার চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর আবার জামিন শুনানি রয়েছে। রায় দেখে আমরা আমাদের পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করব।
সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের প্রতিনিধি প্রসেনজিৎ হালদার বলেন, আমরা সোমবার যে সমাবেশ করেছি, সেখানে একদল দুষ্কৃতিকারী উগ্রবাদী লোক অমানবিকভাবে হামলা করেছে। এতে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের ৩০ জন সমর্থক আহত হয়েছেন। এ সময় ২ জন নারী সমর্থককেও লাঞ্ছিত করা হয়।
তিনি বলেন, সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী ঢাকা এসেছিলেন। পরে তিনি আবার চট্টগ্রাম যাওয়ার সময় তাকে বিমানবন্দর থেকে ডিবি পরিচয়ে তুলে আনা হয়। বিষয়টি শোনার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে উপস্থিত হই। সেখানে উপস্থিত চিন্ময় প্রভুর সমর্থকরা ডিবি কর্মকর্তাদের কাছে গ্রেপ্তারের তথ্য জানতে চান। কিন্তু তারা কেউই এই সংক্রান্ত তথ্য ঠিকমতো দিতে পারেননি।
প্রসেনজিৎ বলেন, তখন সমর্থকরা মিছিল নিয়ে শাহবাগ এসে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করে। কিন্তু সমাবেশ চলমান অবস্থায় একদল উগ্রবাদী ও দুষ্কৃতিকারী হামলা করে। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতেই এই হামলা হয়েছে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উপস্থিত ছিল। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে হামলা প্রতিরোধে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমরা অবিলম্বে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।