চুরির অপবাদে পশুর মতো পেটানো হয় ৪ শিশুকে

1 week ago 9

সিরাজগঞ্জে মোবাইল ফোন চুরির অপবাদ দিয়ে চার শিশুকে অপহরণ করে জঙ্গলের মধ্য নিয়ে দিনভর আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তিন যুবকের বিরুদ্ধে। এ সময় ওই শিশুদের পরিবারের কাছে টাকাও দাবি করা হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাতে ভুক্তভোগী শিশু মো. শাহিন মোল্লার মা সেলিনা খাতুন বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। 

অভিযুক্তরা হলেন, চর গাছাবাড়ি গ্রামের মো. বেল্লালের ছেলে  মো. মোন্নাফ (২৩), একই গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে মো. হজরত (২৬) ও চর সয়দাবাদের মো. সবুজ (১৯)। 

আহত শিশুরা হলো সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের চর গাছাবাড়ি গ্রামের মো. মোমিনের ছেলে মো. নূর ইয়ামিন (১০), একই গ্রামের সেরাজুল ইসলামের ছেলে মো. ইমরান ওরফে ইমন (১০), মো. মনিরুদ্দিনের ছেলে মো. জুনাইদ (১১) ও মো. নবীদুল মোল্লার ছেলে মো. শাহিন মোল্লা (১৩)। এদের মধ্যে তিন শিশু সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। 

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে হাসপাতাল থেকে নূর ইয়ামিনের মা উম্মে কুলসুম ও জুনায়েদের দাদি লিলি খাতুন বলেন, মোবাইল চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গত সোমবার (১১ নভেম্বর) সকাল ৯টায় হজরত আলী, মুন্নাফ ও সবুজ চার শিশুকে ডেকে ভ্যান গাড়িতে করে পঞ্চসোনা গ্রামের পশ্চিমে জঙ্গলের মধ্য নিয়ে যায়। সেখানে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আটকে রেখে তাদের মারধর করে। একপর্যায়ে বাড়িতে ফোন দিয়ে দেড় লাখ টাকা দাবি করে তারা। স্থানীয় লোকজন আসার পর চার শিশুকে ফেলে রেখে চলে যায় তারা। আহত অবস্থায় চারজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে বিচার চাইলেও অভিযুক্তরা সালিশে উপস্থিত হয়নি। 

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশু নূর ইয়ামিন ও জুনাইদ বলে, আমরা মোবাইল চুরির বিষয়ে জানতাম না। আমাদের ডেকে নিয়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে রড দিয়ে মারপিট করে, বিড়ির আগুন দিয়ে ছেঁকা দিয়েছে। 

অভিযোগকারী সেলিনা খাতুন বলেন, শিশুদের অপহরণ করে নিয়ে মারপিট করার পর তাদের বলেছে, বাড়িতে ফোন দিয়ে বল দেড় লাখ টাকা দিলে তোদের ছেড়ে দেওয়া হবে। খবর পেয়েই আমি ঘটনাস্থলে গেলে আমাকেও মারপিট করে ওই সন্ত্রাসীরা। স্থানীয় লোকজন এলে তারা পালিয়ে যায়। 

অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আলমাছ আলী বলেন, হজরত আলীর তাঁত ফ্যাক্টরি থেকে মোবাইল চুরি হয়েছিল। ওই চার শিশুকে চুরির অপবাদ দিয়ে কয়েক ঘণ্টা আটকে রেখে চড়-থাপ্পড় দিয়েছে। পরে বেলকুচির তামাই এলাকা থেকে ফোনটি উদ্ধার হয়েছে। 

সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম বলেন, মোবাইল চুরির অপবাদে চার শিশুকে আটকে রেখে মারধরের বিষয়ে থানায় অভিযোগ হয়েছে। বৃহস্পতিবার অভিযোগটি পেয়েছি। এর মধ্যে মোবাইলটি উদ্ধার হয়েছে বলে শুনেছি। ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Read Entire Article