রাজধানীর বারিধারায় ডি’ ম্যাজেনড গীর্জা ও সেন্ট ইউজিন স্কুলের সামনে আবর্জনার ডিপো স্থাপনের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে নয়ানগরে গীর্জার বিপরীতে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে স্থানীয় বাসিন্দা, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক, সমাজকর্মী ও ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। গীর্জা, সেন্ট ইউজিন স্কুল ও স্থানীয় এলাকাবাসীর যৌথ উদ্যোগে এই মানববন্ধন হয়। দুপুরে চার্চ ও স্কুলের পক্ষ থেকে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
কর্মসূচিতে ডি’ ম্যাজেনড গীর্জার পরিচালক ফা. সুবাস গমেজ (ওএমআই) বলেন, গীর্জা প্রার্থনা ও পবিত্রতার জায়গা। সামনে আবর্জনার ডিপো মানে সেই পরিবেশ নষ্ট করা। এটা শুধু খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নয়, পুরো এলাকার মানুষের মর্যাদার প্রশ্ন। আমরা শান্তিকামী, কিন্তু দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। জনস্বাস্থ্য ও ধর্মীয় মর্যাদার প্রশ্নে কোনো আপস নয়।
সেন্ট ইউজিন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফা. পিন্টু কস্তা (ওএমআই) বলেন, শিশুরা প্রতিদিন এই পথ দিয়ে আসে। দুর্গন্ধ ও ধোঁয়ার মধ্যে তাদের ক্লাস করতে হবে, এটা কল্পনাতীত। স্বাস্থ্যঝুঁকি তো আছেই, মনোযোগও হারাবে।
বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নির্মল রোজারিও বলেন, একটি উপাসনালয় ও স্কুলের সামনে ডিপো স্থাপন ধর্মীয় সংবেদনশীলতার প্রতি অবমাননা। আমরা চাই, এ সিদ্ধান্ত দ্রুত প্রত্যাহার করা হোক।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, কারিতাস বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, ঢাকা ক্রেডিট ইউনিয়ন স্কুল ও বারিধারা সোসাইটি, স্থানীয় খ্রিস্টান সমবায় সমিতির নেতারা সংহতি জানান।
বক্তারা বলেন, গীর্জা ও স্কুলের সামনে বর্জ্য ডিপো নির্মাণ জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও ধর্মীয় পরিবেশের জন্য গুরুতর হুমকি। দুর্গন্ধ, মশা-মাছি ও সংক্রমণের আশঙ্কায় আশেপাশের বাসিন্দা ও শিশুরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে।
তারা অভিযোগ করেন, উত্তর সিটি করপোরেশনকে একাধিকবার লিখিতভাবে জানানো হলেও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। শান্তিপূর্ণ উপায়ে বারবার অনুরোধ করেও কোনো ফল না পেয়ে তারা এ কর্মসূচিতে নেমেছেন।
বক্তারা আরও জানান, যে স্থানে ডিপোটি নির্মাণ করা হচ্ছে, তার ঠিক পেছনেই রয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) কার্যালয় এবং বাংলাদেশ ইরাক দূতাবাস। এমন একটি নিরাপত্তা ও কূটনৈতিকভাবে সংবেদনশীল এলাকায় আবর্জনার ডিপো স্থাপন শুধু স্বাস্থ্যঝুঁকি নয়, নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগও সৃষ্টি করবে।