জাবিতে হলের ছাদে মাদক সেবন, ১৫ শিক্ষার্থীসহ ধরা ছাত্রদল নেতা

2 hours ago 3

আবাসিক হলের ছাদে মদ ও গাঁজা সেবনকালে শিক্ষার্থীদের হাতে ধরা পড়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের এক নেতাসহ ১৫ শিক্ষার্থী।

ওই ছাত্রদল নেতার নাম মো. জাবের। তিনি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এবং মওলানা ভাসানী হলের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ২টার দিকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হলের ছাদে এ ঘটনা ঘটে।

জাবের বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১তম ব্যাচের (২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ) আইবিএর শিক্ষার্থী। তিনি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার মজুমদার শিমুলের অনুসারী বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, হলের ছাদে নবীন শিক্ষার্থীদের র‍্যাগ দেওয়া হচ্ছে—এমন খবর পেয়ে সেখানে যান হল সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীরা। এসময় হলের ছাদের পানির ট্যাংকের ওপরে প্রায় ১৫ জনের দলবল নিয়ে বাংলা মদ পান ও গাঁজা সেবন করছিলেন জাবের। মাদক সেবনকালে তাদের দেখতে পেয়ে পরিচয় জানতে চান প্রতিনিধিরা। তবে তারা পরিচয় দিতে অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে হলের প্রাধ্যক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে খবর দিতে গেলে জাবের ও তার সঙ্গে থাকা শিক্ষার্থীরা ক্ষেপে গিয়ে মারমুখী আচরণ করেন। জাকসুর এক প্রতিনিধি সেখানে উপস্থিত হলে তাকেও দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তারা।

জাবেরের সঙ্গে এসময় আরও যারা ছিলেন তারা হলেন আদিত্য (আইবিএ ৪৭), প্রথম (আইবিএ ৫১), জাবির (আইবিএ ৫১), তৌহিদ (আইবিএ ৫০), জিহাদ (আইবিএ ৫০), লাবিব (আইবিএ ৫২), সাখাওয়াত (আইবিএ ৫৩), রেজওয়ান (আইবিএ ৫১), নোমান (আইবিএ ৫০), প্রসেনজিৎ (আইবিএ ৫০), সামির (আইবিএ ৪৯)। তবে বাকিদের নাম জানা যায়নি।

এ ঘটনার পর হল প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন শিক্ষার্থীরা। তবে তিনি ঢাকার বাইরে থাকায় ঘটনাস্থলে আসতে পারেননি। এছাড়া গভীর রাত হওয়ায় ফোনে সাড়া দেননি হলের দায়িত্বরত অন্যান্য শিক্ষকরাও। একপর্যায়ে প্রক্টর অধ্যাপক একেএম রাশিদুল আলমকে অবহিত করেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক হল প্রাধ্যক্ষের অনুমতি ছাড়া প্রক্টর হলে প্রবেশ করতে না পারায় তিনি মাদকসহ ধরা পড়াদের পরিচয় ও প্রমাণ নিয়ে রাখতে বলেন।

তাজউদ্দীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শরিফুল আলম সাকিব বলেন, ‌‌‘হলের ছাদে মদ ও গাঁজা সেবনের খবর পেয়ে আমরা সেখানে যাই। এসময় তাদের কাছে বাংলা মদ, গাঁজা ও অন্যান্য মাদকদ্রব্য পাওয়া যায়। পরে তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা আমাদের সঙ্গে আক্রমণাত্মক আচরণ শুরু করেন।’

তাজউদ্দীন হল সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাকিব আহমেদ বলেন, ‘তাদেরকে আমরা মদ ও গাঁজাসহ হলের ছাদ থেকে ধরি এবং প্রক্টর স্যারকে এ বিষয়ে জানাই। তিনি আমাদেরকে ভিডিও করে তাদের পরিচয় জানতে বলেন। আমরা তাদের কাছে পরিচয় জানতে চাইলে আক্রমণাত্মক আচরণ করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘মদ, গাঁজাসহ মাদকদ্রব্যগুলো প্রক্টরের নির্দেশে জব্দ করা হয়েছে। এগুলো প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, ‘হলের শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জানিয়েছে। গভীর রাত হওয়ায় হল প্রাধ্যক্ষ ও দায়িত্বরতদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে সাড়া পাইনি। তবে অভিযুক্তদের নাম-পরিচয় ও সঙ্গে থাকা মাদকদ্রব্য প্রক্টর অফিসে জমা দিতে বলেছি। আমরা ব্যবস্থা নেবো।’

মো. রকিব হাসান প্রান্ত/এসআর/এমএস

Read Entire Article