সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে জামায়াত সমর্থিত শিক্ষক নেতাদের মাইক্রোবাসে ডাকাতির ঘটনায় ৪ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (১২ মার্চ) বিকেলে গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে তিনজন সিরাজগঞ্জের পৃথক ৩টি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার মাহমুদপুর ৩নং গলির হামিদুল ইসলামের ছেলে মো. তুষার হোসেন (৩০), রায়পুর উত্তরপাড়া (১ নং মিলগেইট) এলাকার আব্দুল লতিফ খানের ছেলে তুষার আহম্মেদ অন্তর খান (২৯) ও কামারখন্দ উপজেলার কোনাবাড়ি গ্রামের মানিক মণ্ডলের ছেলে আব্দুর রহিম মন্ডল (৩৬)। গ্রেপ্তার অপরজন কামারখন্দের কোনাবাড়ি গ্রামের সোলেমান মণ্ডলের ছেলে মো. রাশেদুল ইসলাম ওরফে কেতু ওরফে কেচু (৩৫)।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিরাজগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের এসআই নাজমুল হাসান জানান, ৯ মার্চ রাতে ঢাকা থেকে রাজশাহী যাওয়ার পথে কোনাবাড়ি এলাকায় ডাকাতির স্বীকার হয় জামায়াত সমর্থিত শিক্ষক নেতাদের মাইক্রোবাসটি। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হওয়ার পর ডাকাতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে পুলিশ সুপার মো. ফারুক হোসেনের নির্দেশে একটি টিম গঠন করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মো. জিয়াউর রহমানের তত্ত্বাবধানে সহকারী পুলিশ সুপার কামারখন্দ সার্কেল ও গোয়েন্দা পুলিশের ওসি একরামুল হোসাইনের নেতৃত্বে গঠিত টিম তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ডাকাতদের শনাক্ত করেন। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪ জন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ১টি রামদা, ১টি হাঁসুয়া, ১টি ডেগার, ১টি লোহার রড, উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়াও লুট হওয়া তিনটি মোবাইল ও নগদ ১৪ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে।
তিনি জানান, গ্রেপ্তার রাশেদুল ইসলাম ওরফে কেতুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৭টি ডাকাতি, ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মামলা রয়েছে। এ ছাড়াও একই অভিযোগে বিভিন্ন থানায় তুষার হোসেনের বিরুদ্ধে ১১টি মামলা রয়েছে। রাশেদুল ইসলাম কেতু বাদে বাকিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, রোববার (৯ মার্চ) রাতে বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে মাইক্রোবাসযোগে রাজশাহী ফিরছিলেন শিক্ষক নেতারা। রাত ৯টার দিকে মাইক্রোবাসটি যমুনা সেতু পশ্চিম মহাসড়কে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার কোনাবাড়ি ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এলাকায় পৌঁছালে ডাকাতদল মাইক্রোবাসের পেছনে ঢিল ছোড়ে। বিকট শব্দে চালক চাকা পাংচার হয়েছে ভেবে মাইক্রোবাসটি রাস্তার পাশে দাঁড় করান। পরে মহাসড়কের সাইড থেকে ৭-৮ জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মাইক্রোবাসটিতে হামলা চালায়। সংঘবদ্ধ ডাকাতদল অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জামায়াত নেতাদের ৭টি মোবাইল ফোন ও প্রায় ৭৭ হাজার টাকা নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জামায়াত নেতা ড. মো. ওবায়দুল্লাহ বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।