১৯৭১ সালে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার বিষয়টি বিদ্যুৎ চমকানোর মতো ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
রোববার (০৯ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে উত্তরাঞ্চল ইঞ্জিনিয়ার্স ফোরামের উদ্যোগে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য টুকু বলেন, ‘আমি পাকিস্তান দেখেছি। বাংলাদেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা কাছ থেকে দেখেছি। যে দলটি নিজেদেরকে স্বাধীনতার একমাত্র এজেন্ট মনে করে- ’৭০ এর নির্বাচনে জনগণ সেই দলটিকে হৃদয় নিংড়িয়ে ভোট দিয়েছিল। তারা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছিল। কিন্তু ইয়াহিয়া খান ও পাকিস্তানী শোষকরা ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি। বরং তারা আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। একটি নিদ্রামগ্ন জাতির ওপর সশস্ত্র আক্রমণে ঢাকার রাজপথে হাজারো খেটে খাওয়া মানুষের লাশ আমরা দেখেছি।’
তিনি বলেন, তবে জনগণ যাদেরকে ভোট (’৭০-এর নির্বাচন) দিয়েছিল- তাদের কোনো খোঁজ না পেয়ে জনগণ হতাশ হয়েছিল। আজকে যেমন তারা পালিয়েছে, ঠিক তেমনই ওই সময় সাত কোটি মানুষকে একদম হায়েনার সামনে ফেলে তারা নিরাপদ স্থানে চলে গিয়েছিল। মানুষ যখন হতাশায়, সেসময় কতজন তরুণের খোঁজ পেলাম- যারা নরসিংদীর শিবপুরে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেখানে পৌঁছানোর আগেই সন্ধ্যায় একজন লোক ট্রানজিস্টর নিয়ে এসে বলছে- একজন মেজর স্বাধীনতার ঘোষণা করেছে। ঠিক সেসময়টা আমার শরীরে মনে হয় বিদ্যুৎ চমকালো। আমি নিজ কানে শুনলাম জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আজকে অনেকেই বলেন যে, তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। ৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা হয়েছে। আমিও কিন্তু ওই সময় রেসকোর্স ময়দানে ছিলাম। খুব ভালো করে শুনবেন, ওই বক্তৃতা ছিল কম্প্রোমাইজের বক্তৃতা। একদিকে হুমকি-ধমকি, আরেকদিকে ক্ষমতায় যাওয়ার নেগোসিয়েশন। যদি সেদিনই স্বাধীনতার ঘোষণা হতো, তাহলে ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে দুই সপ্তাহের আলোচনায় কী হয়েছে? মূলত ক্ষমতায় কীভাবে যাবেন, সেটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে সৈনিকরা এবং সাধারণ মানুষ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। ফলে মানুষের মধ্যে আস্থার জায়গা করে নেন জিয়াউর রহমান।
তিনি আরও বলেন, দেশে ১৯৭৫ সালের ৩-৭ নভেম্বর কোনো সরকার ছিল না। মানুষ জানে না তারা কোথায় যাবে? ৭ নভেম্বর ভোরে জনগণ জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করে যখন এনেছিল, তখন জনগণ মুক্তির নতুন স্বপ্ন দেখেছিল। জিয়াউর রহমান অন্ধকারের মাঝে আলো এনেছিলেন। তিনি ছিলেন জাতির ঐক্যের প্রতীক।
উত্তরাঞ্চল ইঞ্জিনিয়ার্স ফোরামের সভাপতি প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মন্নুর আহমেদের পরিচালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন-‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর আহ্বায়ক সিনিয়র সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন, অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (এ্যাব) আহ্বায়ক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী সৈয়ব বাশরী হাবলু, প্রকৌশলী শামীম রাব্বি সঞ্চয়, প্রকৌশলী এ কে এম জহিরুল ইসলাম, প্রকৌশলী মো. তুষার, প্রকৌশলী মো. আব্দুস সালাম, প্রকৌশলী মো. নিয়াজ উদ্দিন ভূঁইয়া, প্রকৌশলী মো. আলিমুল বাহার রিপন, সাবেক ছাত্রনেতা প্রকৌশলী মো. মজিবুর রহমান (কাজল), প্রকৌশলী আমানুল ইসলাম আমান, প্রকৌশলী ফজলার রহমান, প্রকৌশলী আবু সায়িদ, প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম রিমন, প্রকৌশলী আইনুল হক জেমস, প্রকৌশলী লিয়াকত, প্রকৌশলী বাসেত, প্রকৌশলী আলামগীর, প্রকৌশলী রাব্বানি, প্রকৌশলী আতিক, প্রকৌশলী জামিল, প্রকৌশলী নাযমুল, প্রকৌশলী এনামুল, প্রকৌশলী রাজিব প্রমুখ।
বক্তারা ৭ নভেম্বরের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জিয়াউর রহমানের জাতীয়তাবাদী চেতনার ঝান্ডা হাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশ গড়ার আহ্বান জানান।

2 hours ago
5








English (US) ·