জুবিনকে নিয়ে যা বললেন সোহম চক্রবর্তী
ভারতের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী জুবিন গর্গের আকস্মিক মৃত্যুতে সংগীতাঙ্গন শোকে স্তব্ধ। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সিঙ্গাপুরে স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন এই গুণী সংগীতশিল্পী। ভারতীয় বাংলা সিনেমার একাধিক জনপ্রিয় গানের কণ্ঠশিল্পী ছিলেন তিনি। তার মৃত্যুতে সহশিল্পী ও বন্ধু সোহম চক্রবর্তী ভেঙে পড়েছেন। প্রিয় গায়কের চলে যাওয়া খবরে, জানালেন তার আবেগঘন স্মৃতিচারণ।
ভারতীয় এক গণমাধ্যমে স্মৃতিচারণ করে সোহম বলেন, ‘জুবিন গর্গ নেই! খবরটা শুনে বিশ্বাস করতে পারছি না। সামনে পূজা। উৎসবের আগে এমন অন্ধকার নেমে আসবে, কল্পনাও করতে পারেনি। সকাল থেকেই মনটা বেশ খারাপ। ভাবিনি এমন দুঃসংবাদ শুনতে হবে। জুবিনের সঙ্গে আমার তো কম স্মৃতি নেই। খুব মজার মানুষ ছিলেন। ভীষণ খোলামেলা। যখনই দেখা হতো, কোথা দিয়ে যে সময় কেটে যেত, বুঝতেই পারতাম না।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রেম আমার’ আমার ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ সিনেমা। সেই সিনেমার জনপ্রিয় গান ‘বোঝে না সে বোঝে না’। জুবিনের গলায় সেই গান আজও সমান জনপ্রিয়। জুবিনের ‘ইয়া আলি’ আমার ভীষণ পছন্দের একটি গান। যখনই এই গানটা শুনতাম, মনে হতো কবে জুবিনের গাওয়া গানে লিপ দেব। ম্যানিফেস্ট করতাম, আমার জন্য অন্তত একটি গান জুবিন গায়। ঈশ্বর আমার কথা শুনেছেন।
সোহমের কথায়, যখন জানতে পারলাম ‘প্রেম আমার’ সিনেমায় জুবিনের গাওয়া গানে লিপ দেব, ভীষণ আনন্দ হয়েছিল। খুব খুশি হয়েছিলাম। তারপর তো জুবিনের সঙ্গে আলাপ হলো, বন্ধুত্ব হলো। তারপর আমার বেশ কয়েকটি সিনেমায় জুবিন গান গাইলেন। ধীরে ধীরে সম্পর্ক গাঢ় হলো।
একসঙ্গে প্রচুর স্টেজ শো করেছি। যখনই আমরা একসঙ্গে স্টেজে উঠতাম, দর্শক ‘বোঝে না সে বোঝে না’ শুনতে চেয়েছেন। আর জুবিন আমাকে মাইকটা এগিয়ে দিতেন। আমার তো তখন ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা। জুবিনের সামনে গান গাইতে গিয়ে তো আমার অবস্থা খারাপ হয়ে যেত।
আসামে যখনই বেড়াতে গিয়েছি, জুবিন বাড়িতে থাকলে আমার সঙ্গে দেখা করেছে। আসামে শো করতে গেলে, যে কোনো সমস্যায় জুবিনকে একটা ফোন করলেই ও সব রকমভাবে সাহায্য করেছে। তবে সম্পর্কের গায়েও তো ধুলো পড়ে। মাঝের বেশকিছু বছর ওর সঙ্গে আমার যোগাযোগ ছিল না। তবে ওর কাজ সম্পর্কে খোঁজখবর রাখতাম।
সবশেষে অভিনেতা বলেন, আমার সবচেয়ে বড় আফসোস কি জানেন? আমার আগামী একটি বাংলা সিনেমায় জুবিন গান গেয়েছেন। সেই সিনেমাটা মুক্তির অপেক্ষায়। ভেবেছিলাম হয়তো দেখা হবে। সেটা আর হলো না। আমি ওর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি। তুমি পরপারে ভালো থেকো জুবিন।