শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) জেলাভিত্তিক সংগঠনের নতুন কমিটি গঠনের পর পদ-পদবি নিয়ে দ্বন্দ্বে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
সোমবার (২৬ মে) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন তপোবন আবাসিক এলাকার একটি মেসে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাকিল হাওলাদার, একই বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মোবাশ্বির হাসান ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সোহান শাহ।
শাকিল ও মোবাশ্বির সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে সোহান শাহ কোথায় চিকিৎসা নিচ্ছেন তা জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, সুনামগঞ্জ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটি প্রকাশিত হলে সহ-সভাপতির পদে দায়িত্ব পান সোহান শাহ। কমিটিতে পদ নিয়ে মোবাশ্বির হাসানের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। পরে সোহানের কয়েকজন সহপাঠী ও মোবাশ্বিরের বিভাগের কয়েকজন জুনিয়রের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে বলে জানান তারা। পরবর্তীতে প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ও আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।
ঘটনার বিষয়ে মোবাশ্বির হাসান বলেন, ‘নতুন কমিটিতে সভাপতির পদ না দেওয়ায় সোহান আমার রুমে এসে মারধর করে। আমি ঘুমে ছিলাম। হঠাৎ দরজায় লাথির আওয়াজ শুনে দরজা খুলি। তখন সোহান আমাকে বলে, তুই আমাকে সভাপতি পদ দিলি না কেন। তখন আমি বললাম, এটা তো আমাদের ব্যাচের সবাই বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর তুই তো প্রোগ্রামেও আসতি না।‘
তিনি আরও বলেন, ‘আমি তার সিনিয়র হওয়া স্বত্বেও আমাকে তুই তুকারি করে ও গায়ে হাত তুলে। তার সঙ্গে গণিত বিভাগের তার দুইজন বন্ধুও ছিল। একজনের নাম ইবনু, অন্যজনের নাম জানি না। এসময় আমার বিভাগের শাকিল ও মোস্তাক আসে। আমার সঙ্গে সোহান কেন তুই তুকারি করছে ও গায়ে হাত তুলেছে তা জিজ্ঞেস করে। তখন তিনটি ইটের টুকরা দিয়ে আমাদের ওপর ঢিল নিক্ষেপ করে। ইটের আঘাতে শাকিলের হাত থেতলে যায়। তার হাতে ১২টি সেলাই লেগেছে। আমি ও শাকিল এখন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছি।’
সংঘর্ষের সময় উপস্থিত অ্যাসোসিয়েশনের আরেক সদস্য মোস্তাক আহমদ বলেন, ‘আমি মোবাশ্বির ভাইয়ের রুমে গেলে দেখি উত্তেজনা চলছে। পরে সোহান আমাদের ওপর ইট নিক্ষেপ করে। এতে শাকিল ভাইয়ের হাত থেতলে যায়।’
এ বিষয়ে জানতে সোহান শাহকে একাধিকবার কল দিলেও ফোন বন্ধ থাকায় সাড়া পাওয়া যায় নি।
তবে এর আগে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘কমিটি গঠন নিয়ে মোবাশ্বিরের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। আমি অভিযোগ করি, তিনি ছাত্রলীগের রানিং ছেলেদের দিয়ে কমিটি করেছেন। একপর্যায়ে তিনি ও শাকিলসহ প্রায় ২০-২৫ জন আমার ওপর হামলা চালান।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক বেলাল হোসেন শিকদার বলেন, ‘আহতদের চিকিৎসার জন্য আমরা সঙ্গে ছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বসে এই বিষয়টির সমাধান করবে।’
এদিকে ঘটনার পর জালালাবাদ থানার পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশীদ বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নাঈম আহমদ শুভ/এমএন/জিকেএস