ঝুঁকি নিয়ে খেয়া পারাপার

2 hours ago 6

বাগেরহাটের সাইনবোর্ড–শরণখোলা আঞ্চলিক মহাসড়কের মোরেলগঞ্জের বিশাল পানগুছি নদীতে এখনো নির্মিত হয়নি কোনো সেতু। মোংলা–ঘষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌচ্যানেলের অংশ এই খরস্রোতা নদীতে একটি মাত্র সেতুর অভাবে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন আশপাশের এলাকার মানুষ। 

প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, রামপাল, মোংলা, মঠবাড়িয়া ও ভান্ডারিয়া উপজেলার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষকে ইঞ্জিনচালিত ছোট খেয়া ট্রলারে নদী পারাপার করতে হচ্ছে।

এই ঝুঁকিপূর্ণ পারাপারের কারণে গত ১২ বছরে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩০ জন যাত্রী।

খেয়া পারাপারের যাত্রী ইব্রাহীম হোসেন, শংকর চন্দ্র সাহা, ইলিয়াস শিকদার ও বিলকিস আক্তার জানান- সুন্দরবন ভ্রমণকারী পর্যটকসহ আশপাশের কয়েকটি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ প্রতিদিন অফিস–আদালত, চাকরি, স্কুল–কলেজ ও ব্যবসায়িক কাজে নদী পারাপার করেন। কিন্তু খরস্রোতা পানগুছি নদীতে প্রতিটি খেয়া ট্রলারে ৩০ জন যাত্রী পারাপারের নিয়ম থাকলেও বাস্তবে শতাধিক যাত্রী তোলা হয়।

মোংলা–ঘষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌচ্যানেলে প্রতিনিয়ত বড় বড় কার্গো জাহাজ চলাচলের মাঝেই এসব ছোট ট্রলার চলাচল করছে চরম ঝুঁকি নিয়ে। ট্রলার মালিকদের উদাসীনতা ও নজরদারির অভাবে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।

২০১৭ সালের ১৮ মার্চ সকালে পানগুছি নদীতে শতাধিক যাত্রীবোঝাই একটি খেয়া ট্রলার ডুবে ৫ শিশু, ৯ নারী ও ৫ পুরুষসহ মোট ১৯ জনের মৃত্যু হয়। 

স্থানীয় সালমা বেগম বলেন, প্রতিদিন স্কুলে যেতে এই নদী পার হতে হয়। ঢেউ আর বাতাসে ট্রলার দুলতে থাকে মনে হয় এবার হয়তো ডুবে যাব। সেতু না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কষ্টের শেষ নেই।

মোরেলগঞ্জের ব্যবসায়ী ইলিয়াস শিকদার বলেন, নদী পার হতে সময় লাগে অনেক। কখনও ট্রলার বন্ধ থাকে, কখনও ইঞ্জিন বিকল হয়। রাতে তো আরও ভয় লাগে নৌকার ওপর।

বাগেরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ পানগুছি সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি ২০২১ সালে একনেক সভায় অনুমোদন পায়। ২০২১–২০২২ অর্থবছরে এটি এডিপিতে অন্তর্ভুক্তও ছিল। এখন অর্থ বরাদ্দের ছাড়পত্র পেলেই দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুর দরপত্র আহ্বান করা সম্ভব হবে।

Read Entire Article