‘সবাই মিলে গড়বো দেশ, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ’ এই স্লোগান নিয়ে টাঙ্গাইলে দুদকের গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের উদ্যোগে শিল্পকলা একাডেমিতে এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
গণশুনানিতে সরকারি-বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ২৯টি দপ্তরের বিরুদ্ধে ১৫১টি অভিযোগ জমা পড়ে। এর মধ্যে ৬৯টি শুনানির জন্য তোলা হয়। ৬৯টি শুনানির মধ্যে ৩৮টি তাৎক্ষণিক নিষ্পত্তি, ৬টি দুদকের অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়। অপরদিকে ২৫টির বিষয়ে অভিযোগকারী অনুপস্থিত থাকায় সেগুলোর শুনানি হয়।
সেবাগ্রহীতারা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে হয়রানি, দুর্নীতি, অনিয়ম ও ঘুষ নেওয়াসহ নানা অভিযোগ তুলে ধরেন। এসময় বিভিন্ন সরকারি অফিসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম উঠে আছে।
যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তার মধ্যে অন্যতম হলো- জেলা প্রশাসন, টাঙ্গাইল পৌরসভা, সড়ক বিভাগ, জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা অফিস, এলজিইডি, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিদ্যুৎ অফিস, ভূমি অফিস, বন বিভাগ, কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
জানা যায়, শুনানিতে শহরের বিভিন্ন খাল দখলের অভিযোগ আনা হয় পৌরসভার বিরুদ্ধে। অভিযোগে শহরের শ্যামা খাল দখল করে একাধিক মার্কেট ও বিভিন্ন খাল উদ্ধারের পরিবর্তে ড্রেন করার অভিযোগ আনা হয়। এছাড়াও বহুতল ভবনের নামে কয়েক ব্যবসায়ীকে উচ্ছেদ করার অভিযোগ রয়েছে সাবেক মেয়রদের বিরুদ্ধে। সদর উপজেলার মগড়া ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে টিআর, কাবিটার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। এছাড়াও মামলা দিয়ে হয়রানি অভিযোগ আনা হয় বন বিভাগের বিরুদ্ধে। মিটার থেকে বেশি বিল করার অভিযোগ করা হয় বিদ্যুৎ বিভাগের বিরুদ্ধে। এছাড়া কালিহাতীর তোফাজ্জল হোসেন খান তুহিন কারিগরি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, অর্থ আত্মসাদসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়।
এছাড়াও টাঙ্গাইল সড়ক ও এলজিইডির বিভাগের বিভিন্ন রাস্তায় অনিয়ম ও দুর্নীতি অভিযোগ তুলে ধরা হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের বিরুদ্ধে ভুতুড়ে বিলসহ নানা অভিযোগ করা হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে তোলা হয় বিস্তর অভিযোগ।
দুদক কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক সমাধানের পাশাপাশি বিভিন্ন অনিয়ম দুদকের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তদন্ত করার ঘোষণা দেন। এছাড়াও কিছু অভিযোগ জেলা প্রশাসন ও জেলা দুদকের কর্মকর্তাকে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়।
গণশুনানিতে প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী।
জেলা প্রশাসক শরীফা হকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক মুহাম্মদ রেজাউল কবীর, মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন প্রমুখ।
দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বলেন, এ গণশুনানি সারা দেশেই চলবে। যেসব অভিযোগের গণশুনানি হয়নি সেগুলো পরবর্তীতে জেলা অফিসের মাধ্যমে গ্রহণ করা হবে।
আব্দুল্লাহ আল নোমান/এফএ/জিকেএস