ট্রাম্প কি ইউক্রেনকে ‘বিক্রি’ করে দিচ্ছেন?

3 weeks ago 9

আলাস্কার সামরিক ঘাঁটিতে অনুষ্ঠিত ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের খবর সময়ের ব্যবধানের কারণে ইউক্রেনীয়রা শনিবার সকালেই জানতে পারে। প্রথম প্রতিক্রিয়ায় তাদের কিছুটা স্বস্তি থাকলেও এখন ক্রমেই বাড়ছে উদ্বেগ।

ইউক্রেনীয়দের আশঙ্কা ছিল, ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকে বড় কোনো সমঝোতা হতে পারে, যা ইউক্রেনের স্বার্থের বিরুদ্ধে যাবে। তবে প্রাথমিক আলোচনায় তা হয়নি। এ বিষয়ে এক ইউক্রেনীয় সংসদ সদস্য মন্তব্য করেন, ‘বড় বিপদ এড়ানো গেছে, ট্রাম্প আমাদের বিক্রি করেননি।’

কিন্তু বৈঠকের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশিত হওয়ার পর ইউক্রেনে অস্বস্তি বেড়েছে। আগামী সোমবার (১৯ আগস্ট) ওয়াশিংটনে ট্রাম্প ও ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বৈঠক ঘিরে সেই উৎকণ্ঠা আরও তীব্র হয়েছে।

আরও পড়ুন>>

উদ্বেগের কারণ

সম্মেলনের শুরু থেকেই সতর্কবার্তা স্পষ্ট ছিল। মার্কিন সেনাদের বিছানো লাল কার্পেটে নামেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ট্রাম্পের করতালি ও করমর্দনও চোখে পড়ে সবার। এর আগে কঠোর ভাষায় বক্তব্য দিলেও, কোনো যুদ্ধবিরতি ছাড়াই বৈঠক হওয়ার বিষয়টি অনেক ইউক্রেনীয়কে বিস্মিত করেছে।

ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে বলছেন, আলোচনায় বসা সবসময়ই গঠনমূলক। তবে ব্যক্তিগতভাবে তারা আশঙ্কা করছেন, এই বৈঠক হয়তো রাশিয়ার শর্তেই যুদ্ধ শেষ করার পথ তৈরি করছে।

রাশিয়ার পক্ষে নতুন পরিস্থিতি

সবচেয়ে বড় পরিবর্তন ঘটেছে আলোচনার ক্রমধারায়। ট্রাম্প প্রথমে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, পুতিন যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হলে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেবেন। কিন্তু এখন তিনি হঠাৎই রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেছেন, লক্ষ্য হতে হবে ‘সমগ্র শান্তিচুক্তি’—এক ধরনের ‘সব অথবা কিছুই নয়’ প্রস্তাব।

ইউক্রেন মনে করছে, এটি সহজেই ধ্বংসাত্মক শক্তির হাতে ভেস্তে যেতে পারে বা রাশিয়ার কাছে সর্বোচ্চ ছাড় আদায়ের হাতিয়ার হতে পারে।

ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা সেরহি লেশচেঙ্কো শনিবার আবারও স্পষ্ট করেন, কিয়েভের অবস্থান হলো—প্রথমে যুদ্ধবিরতি, তারপর অন্যান্য সমঝোতা।

ইউক্রেনের শঙ্কা

ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা সূত্র বলছে, পুতিনের চোখে ‘সমগ্র শান্তি’র মানে এখনো ২০২১ সালের সেই বিতর্কিত প্রবন্ধের ধারাবাহিকতা—যেখানে তিনি ন্যাটোর পূর্বমুখী সম্প্রসারণের বিরোধিতা করেন এবং ইউক্রেনের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেন। সেই লেখায় তিনি বলেছিলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন ‘এক জাতি’।

যদিও শুক্রবার ভাষা কিছুটা নরম করে ‘ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের’ কথা বলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। কিন্তু আক্রমণ শুরুর সাড়ে তিন বছর পর হাজার হাজার প্রাণহানি ও কোটি শরণার্থীর বাস্তবতায় ইউক্রেনীয়রা এতে কোনো ভ্রাতৃত্ব খুঁজে পাচ্ছে না।

এরপর কী?

রোববার ইউরোপীয় নেতারা ভিডিও কনফারেন্সে বৈঠক করে নিজেদের অবস্থান সমন্বয় করার কথা রয়েছে। তবে কিয়েভে এখন সবচেয়ে বেশি নজর সোমবারের ওয়াশিংটন বৈঠকের দিকে, যেখানে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির আলোচনায় ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নির্ভর করতে পারে।

কেএএ/

Read Entire Article